আগামী বছর আমদানি হবে ৩৮ লাখ টন জ্বালানি তেল

0
103
জ্বালানি তেল

২০২৪ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ৩৮ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এসব তেল আমদানির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। গতকাল বুধবার আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে আগামী জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ‘সরকার টু সরকার’ পদ্ধতিতে ২৩ লাখ ৪০ হাজার টন পরিশোধিত গ্যাস অয়েল, ৩ লাখ ৭৫ হাজার টন জেট  অয়েল, ২ লাখ ৭৫ হাজার টন মোগ্যাস, ৭ লাখ ৫০ হাজার টন ফার্নেস অয়েল এবং ৬০ হাজার টন মেরিন ফুয়েল আমদানি করা হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন দেশ থেকে কী পরিমাণ ও কত টাকায় জ্বালানি তেল আনা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পরে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এ বিষয়গুলো চূড়ান্ত হবে। জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর এ ধরনের বৈঠক আর হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা তাঁর পক্ষে কঠিন। তবে এ ধরনের কার্যক্রম সরকারের রুটিন কাজ। তাই বৈঠক হতে পারে।

পরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা  হয়। এতে ১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন হয়। সেখানে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ৩৪৪ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার সয়াবিন তেল এবং মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৭ কোটি ১৪ লাখ টাকার তেল এবং ২৬৭ কোটি ৭১ লাখ টাকার মসুর ডাল কেনা হবে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এমএস রায় ট্রেডার্সের কাছ থেকে ৬০ কোটি ৫৯ লাখ টাকায় ৬ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে আরও ১১ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। ১০০ টাকা কেজি দরে এ ডাল কিনতে খরচ হবে ১১০ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে তুরস্ক থেকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতি কেজি ১০২ টাকা ১৩ পয়সায় এ মসুর ডাল কিনতে খরচ হবে ৯৭ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৭৭ কোটি ১৪ লাখ টাকায় ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চার প্রস্তাবের আওতায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও মরক্কো থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টন সার আমদানির প্রস্তাবেরও অনুমোদন মিলেছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৩৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২৫২ কোটি টাকায় ৪০ হাজার টন ডিএপি সার, ১৩৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকায় ৩০ হাজার টন টিএসপি সার এবং ২৫২ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনা হবে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ‘কৈলাশটিলা ৮ নম্বর কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন’ এর পাঁচ খাতে ৪ কোটি ১ লাখ ৬ হাজার ৭৭০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।  পাশাপাশি ৮০ কোটি ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬২ টাকা ব্যয়ে গ্যাস কূপটির খনন অপারেশন এবং তৃতীয় পক্ষীয় প্রকৌশল সেবা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।

এ ছাড়া বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়কের বরিশালের চর কাউনিয়া থেকে ভোলা ইলিশা ফেরিঘাট হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের ব্যয় ৩৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা বাড়ানোসহ আরও দুটি পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.