আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে না: প্রধানমন্ত্রী

0
177
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি- ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। এই দল জনগণের কল্যাণে কাজ করে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে বলেই জনগণ তাদের ভোট দেয়। এটি জনগণের দল। আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে না।

মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, খুব একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল ১০ তারিখ (১০ ডিসেম্বর) নিয়ে। কিন্তু এত ঢাকঢোল পিটিয়ে চলে গেল গোলাপবাগে। এখন আবার বলে ১১ তারিখ (১১ জানুয়ারি) থেকে তারা নাকি আন্দোলন করবে। একটা কথা বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। আওয়ামী লীগকে উৎখাত করা এত সহজ নয়। ধাক্কা দিল আর আওয়ামী লীগ পড়ে গেল, এত সহজ নয়।

বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর আজকের গণঅবস্থান কর্মসূচি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে জুটে গেছে অতি বাম, অতি ডান। সব অতিরা এক জায়গায় হয়ে আতি-পাতি নেতা হয়ে তারা নাকি একেবারে ক্ষমতা থেকে আমাদের উৎখাত করবে। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে কেউ যদি ভোট চুরি করে, তাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে আওয়ামী লীগই পারে। এটা প্রমাণ করেছি বারবার। আমরা গণতন্ত্রের চর্চা নিজের দলে করি। দেশেও গণতন্ত্র চর্চা করি। বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ তারা গণতন্ত্রের কথা বলে! তাদের নিজেদেরই তো গণতন্ত্র নেই। তাদের দলের কোনো ঠিকানা নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি বলে তারা এর সুবিধা নিয়ে গণতন্ত্রের জন্য গলা ফাটাচ্ছে। আর তাদের কিছু ভাড়াটে লোক আছে, দেশ-বিদেশে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় সারাদিন কুৎসা রটাবে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগই একমাত্র শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর আগেও হয়নি, পরেও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। খালেদা জিয়ার অধীনে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আর ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল করতে বাধ্য হয়। ভোটচুরি করায় জনগণই তাদের বিতাড়িত করে। বারবার যারা জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত ও বিতাড়িত, তারা গণতন্ত্রটা চর্চা করল কবে? আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে মনে রাখতে হবে, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তোলে না। সেই নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২৯টা সিট পেয়েছে, পরে উপনির্বাচনে আরেকটা পায়। সেই থেকে ক্ষমতায় আসার পর জনগণের কল্যাণে কাজ করে আর্থসামাজিক উন্নতি সাধন করেছি বলেই জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে এর অবিস্মরণীয় গুরুত্বের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। কিন্তু সেটা অধরা ছিল। বাঙালির মুখে কিন্তু সেই রকম হাসি ফোটেনি। জাতির পিতা দেশে ফিরে এলে সেদিনই যেন আমাদের বিজয় সম্পূর্ণ হলো। স্বাধীনতা অর্জনটা সার্থক হলো। তাঁর আদর্শ-নীতি অনুসরণ করেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.