আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আগ্রহী পর্যটকদের নিয়ে নিখোঁজ হওয়া সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজকে ‘ঘড়ির কাটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে’ খোঁজা হচ্ছে। চলমান এই উদ্ধার তৎপরতায় ‘আশার আওয়াজ’ শোনা গেছে।
মঙ্গলবার এমন আওয়াজ পাওয়া গেছে, মনে হচ্ছে ডুবোজাহাজের ভেতর থেকে সেটিকে কেউ আঘাত করছে। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এ শব্দ শোনা গেছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে শোনা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই শব্দ নিখোঁজ হওয়া পাঁচ পর্যটককে ফিরে পাওয়ার আশা জাগিয়ে রেখেছে। খবর- বিবিসি
বিবিসি বলছে, অভ্যন্তরীণ মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগে পাঠানো গোপন মেমোর উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আটলান্টিকের ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যে বিশাল এলাকায় এই তল্লাশি চলছে তা যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের সমান।
সাবমেরিনটির খোঁজে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডার নৌবাহিনী এবং গভীর সাগরে কাজ করে এমন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো। কীভাবে এই উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে তা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাউগের। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, একটি সাবমেরিন এবং সনার যন্ত্র নিয়ে সাবমেরিনটি খোঁজা হচ্ছে। পানির নিচে ও ওপরে দুইভাবে খোঁজা হচ্ছে। সাবমেরিনটি হয়তো কোথাও ভেসে উঠতে পারে, কিন্তু তাদের যোগাযোগ যন্ত্র নষ্ট হয়ে গেছে। সেজন্য বিমান দিয়ে সাগরের ওপরে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে সনার যন্ত্র ব্যবহার করে পানির নিচেও তল্লাশি করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, রোববার সাগরে ডুব দেওয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরে ছোট আকারের ওই ডুবোজাহাজটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পানির নিচে যাওয়ার সময় ডুবোজাহাজটিতে সাধারণত চারদিন চলার মতো জরুরি অক্সিজেন থাকে।
হারিয়ে যাওয়া ডুবোজাহাজটির নাম ‘টাইটান সাবমার্সিবল’। অনেকটা ট্রাক আকৃতির এই সাবমেরিনে পাঁচজন ব্যক্তি উঠতে পারেন। পোলার প্রিন্স নামের একটি জাহাজে বহন করে সাবমার্সিবল বা ছোট ডুবোজাহাজটিকে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেটি যাত্রীদের নিয়ে সাগরের গভীরে যায়।
মধ্য আটলান্টিক মহাসাগরের তিন হাজার ৮০০ মিটার বা সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটদিনের এই ভ্রমণের জন্য আড়াই লাখ ডলার খরচ করতে হয়।