অর্ধেকে নামল আদানি গোষ্ঠীর সম্পদ

0
110
আদানি

ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিপর্যস্ত সাম্রাজ্য সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জালিয়াতির অভিযোগের পর শেয়ারবাজারে ধস নামায় এ কোম্পানির সম্পদের মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছে। শুক্রবার আরও ১২ বিলিয়ন ডলার কমেছে তাদের সম্পদ। এ নিয়ে শেয়ারবাজারে ৭ দিনের লেনদেনে এ গোষ্ঠীর সম্পদ কমেছে ১২০ বিলিয়ন ডলার। এর কর্ণধার গৌতম আদানি বিশ্বের শীর্ষ ২০ তালিকায়ও থাকতে পারলেন না। খবর এএফপি, রয়টার্স, ব্লুমবার্গ ও এনডিটিভির।

আদানির শেয়ার কেলেঙ্কারি নিয়ে দেশটির রাজনীতিও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো দেশটির সংসদের উভয় কক্ষে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে সংসদের উভয় কক্ষের স্পিকাররা কার্যক্রম স্থগিত করে দেন। এদিন কিছু আইনপ্রণেতা আবারও যৌথ সংসদীয় কমিটির দাবি তোলেন। তাঁরা স্লোগান দেন, ‘গরিবদের লুট করা বন্ধ করো।’ আগের দিনও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।

মার্কিন শর্ট-সেলার হিনডেনবার্গ রিসার্চ গত ২৪ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে আদানিকে জালিয়াতির জন্য অভিযুক্ত করে। এর পর থেকে আদানির শেয়ারদরে ধস নামে। ফ্ল্যাগশিপ ফার্ম আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দাম গতকাল বোম্বে স্টক এপচেঞ্জে ৩০ শতাংশ কমে যায়। এ ছাড়া আদানি টোটাল গ্যাসসহ আরও কয়েকটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারদর ১০ শতাংশের বেশি কমে গেলে লেনদেন আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েক দিন ধরে একই ধারা দেখা যাচ্ছে।

শুক্রবার ফোর্বসের ওয়ার্ল্ড রিয়েল-টাইম বিলিয়নেয়ার তালিকায় ২২তম অবস্থানে নেমে যান আদানি। এদিন তাঁর সম্পদ কমেছে আরও ২১.৭৭ শতাংশ।

আদানির জন্য এদিন খারাপ পূর্বাভাস দিয়েছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি মুডি’স। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, চলমান সংকটের কারণে আগামী ১-২ বছরে ঋণ পুনঃঅর্থায়নের জন্য আদানি গ্রুপের মূলধন বাড়ানোর সক্ষমতা হ্রাস করতে পারে।

সমালোচকরা বলছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে আদানি অস্বাভাবিক উত্থান হয়েছে। তবে আদানি বলেছেন, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। গতকাল ইন্ডিয়া টুডে টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, ‘আমার পেশাগত সাফল্য কোনো একক নেতার কারণে নয়।’

আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের বিপুল পতনে প্রমাদ গুনতে শুরু করেন ব্যাংকে অর্থ গচ্ছিত রাখা কোটি কোটি সাধারণ মানুষ। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে সাধারণ আমানতকারীদের অভয় দেয় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বলেছে, ভারতের ব্যাংকগুলো নিরাপদ এবং সুরক্ষিত রয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশ্বাস, সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে ভারতীয় ব্যাংকগুলোর সম্পর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তার চিত্র উঠে এসেছে। আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিয়ন্ত্রক হিসেবে তারা ব্যাংকিং ক্ষেত্রের ওপর প্রতিনিয়ত নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।

আদানিকাণ্ডে উদ্বেগের ছায়া যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে পড়েছে। শুক্রবার ডাও জোন্স সূচক তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় আদানির সংস্থাকে। আদানির কারণে হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১.২ শতাংশ কমেছে। চীনের মূল ভূখণ্ডে সাংহাই কম্পোজিট ০.৬৬ শতাংশ এবং শেনজেন কম্পোনেন্ট ০.৬৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.