টানা ১৫-২০ দিন ঝড়বৃষ্টির পর অবশেষে স্বরূপে ফিরেছে চৈত্র। তিন দিন আগে দেশের পাঁচ জেলায় যে মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছিল, এখন সেটি ১৮ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। বেলা একটু গড়ালেই রোদের তাপ যেন প্রখর হয়ে উঠতে শুরু করে। দুপুরে যা পরিণত হয় কাঠফাটা রোদে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী এক সপ্তাহ গরমের তীব্রতা কমার সম্ভাবনা নেই। বরং দেশের বিভিন্ন স্থানে যে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তার তীব্রতা বেড়ে মাঝারি থেকে তীব্রে পরিণত হতে পারে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁতে পারে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কোথাও কোথাও হালকা বাতাস বইলেও তাতে গরমের তীব্রতা কমছে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুর ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মেঘ-বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। তবে কয়েকটি এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হলেও তা কম সময় স্থায়ী হবে। ফলে গরমের তীব্রতা রয়ে যেতে পারে।
আরেক আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরম পড়ে এপ্রিল মাসে। এখন যে তাপমাত্রা, এটা এ সময়ে স্বাভাবিক। এখন গরম পড়েছে বৃষ্টি কমে যাওয়ার জন্য। এ ধারা কয়েক দিন থাকবে।
থার্মোমিটারের পারদ যদি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, আবহাওয়াবিদরা একে মৃদু তাপপ্রবাহ বলেন। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে একে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়ালে ধরা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গত বছর ২১ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছিল।
গতকাল শুক্রবার দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ ছাড়া টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনার ঈশ্বরদী, বগুড়া, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, রাঙামাটি, ফেনী, বান্দরবান, খুলনা, মোংলা, সাতক্ষীরা, যশোর, কুমারখালী, পটুয়াখালীর খেপুপাড়া ও ভোলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। রাজধানীতে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দেশের কোথাও বৃষ্টির খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে তীব্র গরমে রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় মানুষের কষ্ট বেড়েছে। বিশেষ করে এ সময়ে যাঁরা নানা কাজে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন, তাঁদের গরমের কষ্ট বেশি সহ্য করতে হচ্ছে। যেসব এলাকায় গাছপালা ও জলাশয় নেই, সেখানে গরমের তীব্রতা অন্য এলাকার তুলনায় বেশি।