সূর্য থেকে এখন শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হচ্ছে। চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পৃথিবী একটা সৌরঝড়ের শিকার হয়েছে। এর ফলে নির্গত সৌরশিখায় ‘রেডিও ব্ল্যাকআউট’ হয়, যা কিছু উচ্চতরঙ্গের বেতার সম্প্রচার এবং নিম্নতরঙ্গের নেভিগেশন ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। আর সৌরকলঙ্কই এ সৌরঝড়ের জন্য দায়ী।
হিন্দুস্থান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের সৌরশিখার উৎপত্তি ‘এআর৩২১৩’ নামের সৌরকলঙ্ক থেকে। যেটি বর্তমানে সূর্যের মাঝামাঝি এবং পৃথিবীর দিকে মুখ করে আছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এর ফলে পৃথিবীতে আবারও সৌরঝড় হতে পারে।
সূর্যের পৃষ্ঠের দাগ হলো সৌরকলঙ্ক। সৌরশিখার ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় কণা পৃথিবীর পরিমণ্ডল ভেদ করে মানুষের ক্ষতি করতে পারে না। তবে বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে জিপিএস এবং যোগাযোগের তরঙ্গ প্রবাহিত হয়, আঘাত করে সেখানে।
তীব্র এই সৌরশিখা সরাসরি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এলে সঙ্গে আসতে পারে সৌরকণা, যা ‘করোনাল মাস ইজেকশন’ হিসেবে পরিচিত।
এই কণাগুলো ঘণ্টায় কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার বেগে ছুটে বেড়ানোর ক্ষমতা রাখে, যা ১৩ ঘণ্টা থেকে পাঁচদিনের মধ্যে পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। তবে পৃথিবীর পরিমণ্ডল বিভিন্ন ধরনের কণা থেকে আমাদের রক্ষা করে। এতে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এছাড়াও তীব্র বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রবাহিত হওয়ার ফলে মানুষের তৈরি অবকাঠামোগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর মৃদু সৌরঝড়ে মাঝেমধ্যেই মেরু অঞ্চল দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কখনো বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় মহাকাশে ভেসে থাকা কৃত্রিম উপগ্রহও।
প্রথম সৌরঝড় হয় ১৮৫৯ সালে। প্রায় ১৭ ঘণ্টায় সৌরঝড়টি পৃথিবীতে পৌঁছেছিল। টেলিগ্রাফ নেটওয়ার্কের ক্ষতি করেছিল সে সময়ে। বৈদ্যুতিক শক অনুভূত হয়েছিল বলেও জানিয়েছিলেন অনেক টেলিগ্রাফ অপারেটর। ১৯২১ সালে সৌরঝড়ে পৃথিবীর যে ক্ষতি হয়েছিল তা অকল্পনীয়। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এর নাম ‘ক্যারিংটন এফেক্ট’। তখন ঝড়ের কবলে পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশালাকৃতির চৌম্বকক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল।