সেলিম প্রধানের গুলশানের বাসায় বিপুল টাকা, চেক ও বিদেশি মুদ্রা

0
258
সেলিমের বাসা থেকে টাকার উদ্ধার

অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা সেলিম প্রধানের গুলশান-২-এর বাসা কাম অফিস মমতাজ ভিশনে নগদ সাত লাখ টাকা, ৭৭ লাখ টাকা সমমানের বিদেশি মুদ্রা ও আট কোটি টাকার চেক পেয়েছে র‍্যাব। এ ছাড়া সেখানে বিদেশি মদ ও হরিণের চামড়া পাওয়া গেছে।

গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে সেলিম প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে মমতাজ ভিশনে অভিযানে যায় র‍্যাব। দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টার অভিযান শেষে আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে সেখানে থাকা র‍্যাব সদস্যরা এই তথ্য জানান।

গতকাল দুপুরে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে ব্যবসায়ী সেলিমকে নামিয়ে আনে র‍্যাব-১-এর একটি দল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে তাঁকে নিয়ে মমতাজ ভিশনে অভিযানে যায় র‍্যাব। এর মধ্যে আজ দুপুরে সেলিম প্রধানের বনানীর আরেকটি বাসায় অভিযান চালিয়ে আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। ওই বাসা থেকে জব্দ করা হয় প্রায় ২১ লাখ টাকা। পরে আখতারুজ্জামানকে সেলিম প্রধানে গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেলিম প্রধানও ওই বাসায় আছেন।

র‍্যাব সূত্র জানায়, অনলাইনে বিশ্বের সুপরিচিত ক্যাসিনোগুলোর সঙ্গে জুয়াড়িদের যুক্ত করার কাজ করতেন সেলিম। তিনি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ‘প্রধান গ্রুপ’-এর কর্ণধার। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস লিমিটেড, পি২৪ ল ফার্ম, এইউ এন্টারটেইনমেন্ট, পি২৪ গেমিং, প্রধান হাউস ও প্রধান ম্যাগাজিন। এর মধ্যে পি২৪ গেমিংয়ের মাধ্যমে তিনি জুয়াড়িদের ক্যাসিনোয় যুক্ত করতেন।

সেলিমের কোম্পানির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পি২৪ গেমিং শুরুতে বিনোদনমূলক সফটওয়্যার তৈরি ও প্রকাশ করত। এখন তারা এশিয়ায় দ্রুত বড় হতে থাকা ক্যাসিনো কারবারে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এশিয়ার লাইভ ক্যাসিনো মার্কেটে প্রতিষ্ঠানটি যেন এক নম্বরে যেতে পারে, সেই চেষ্টা আছে তাদের। ২০১৬ সালে তারা শুধু কম্পিউটার গেমস বাজারে আনত। পরে অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো কারবারে জড়িয়ে পড়ে। পি২৪-এর সঙ্গে বাংলাদেশে ১৫০টি অপারেটর এবং ক্যাসিনো যুক্ত আছে। অনলাইনে বিশ্বের সবচেয়ে প্রচলিত ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের। জুয়াড়িদের মুঠোফোনে লাইভ ক্যাসিনোতে যুক্ত করে দেওয়ার সুবিধা তারা এনেছে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর।

জানা গেছে, সেলিম প্রধানের সঙ্গে আর্থিক খাতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সেলিম প্রধানের জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারসে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ছাপা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অফিসের নথিপত্রও ছাপানো হয়। তাঁর এই প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংকের শীর্ষ ঋণখেলাপিদের একটি। ২০১৮ সালে ঋণটি পুনঃ তফসিল করা হয়। সেলিমের কাছে ব্যাংকের পাওনা প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সূত্র বলছে, টেন্ডারবাজি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে সেলিম প্রধানের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.