সুগন্ধা নদীতে জাহাজে আগুনের ঘটনায় নিখোঁজ আরও একজনের লাশ উদ্ধার

0
127
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চলছে। আজ সোমবার সকালে

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ নামের জ্বালানি তেলবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ আরও একজনের লাশ পাওয়া গেছে। জাহাজের বিস্ফোরিত হওয়া ইঞ্জিন রুমের ওপরের অংশের মাস্টার কেবিনের একটি খণ্ড আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সুগন্ধা নদী থেকে উত্তোলন করে উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক। সেই কেবিনের মধ্য থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত হওয়া তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধানের দায়িত্বে আছেন। তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া লাশটির পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সুগন্ধা নদীর তীরে অপেক্ষমাণ নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা লাশটিকে শনাক্ত করবেন।

এ নিয়ে এ ঘটনায় দুজনের লাশ উদ্ধার করা হলো। এর আগে গতকাল রোববার বেলা আড়াইটার দিকে বিস্ফোরিত হওয়া ইঞ্জিন রুমের ওপরের একটি মাস্টার কেবিনের অংশের মধ্য থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি ছিল জাহাজের গ্রিজার আবদুস সালাম ওরফে হৃদয়ের (২৬)। তিনি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সমুজদিপুর গ্রামের মৃত রমজান মিয়ার ছেলে।

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ নামের জ্বালানি তেলবাহী জাহাজে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ইঞ্জিন রুম
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ নামের জ্বালানি তেলবাহী জাহাজে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ইঞ্জিন রুম

অগ্নিকাণ্ডের পর আবদুস সালামসহ চারজন নিখোঁজ ছিলেন। বাকি তিনজন হলেন জাহাজের সুপারভাইজার চাঁদপুরের মাসুদুর রহমান (৪৮), চালক বরিশালের রুহুল আমিন (৫৫) ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার উদয়তারা বুড়িরচর গ্রামের মন্নান থানের ছেলে আকরাম হোসেন (৪০)।

এদিকে সকাল থেকে সুগন্ধা নদীতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক রাতেই বরিশাল থেকে এসে এই উদ্ধারকাজে যোগ দেয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘বাকি দুটি লাশ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। শিগগিরই এ ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

গত শনিবার রাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত জাহাজে মজুত করা প্রায় ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল থেকে প্রায় ৭ লাখ লিটার তেল ‘ওটি মৃদুলা’ নামের অপর একটি জাহাজে অপসারণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ডুবে যাওয়া তেলবোঝাই জাহাজটি অনেকটা ভেসে উঠেছে। অবশিষ্ট তেল ওটি সাগর নন্দিনী-৪ নামের অপর একটি জাহাজে অপসারণের কাজ চলছে। এ কাজে সহায়তা করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এখনো অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটিতে প্রায় ৪ লাখ লিটার তেল রয়েছে।

শনিবার বেলা দুইটার দিকে সুগন্ধা নদীর তীরের সরকারি তেলের ডিপোর কাছে নন্দিনী-২ নামের একটি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। এক সপ্তাহ আগে তেলবাহী জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে এসে ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীর তেলের ডিপো-সংলগ্ন এলাকায় নোঙর করে। জাহাজটিতে প্রায় ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল (পেট্রল, ডিজেল) ছিল। এটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ডিপোতে খালাস করার অপেক্ষায় ছিল। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে ডিপো বন্ধ থাকায় তেল খালাস করা সম্ভব হয়নি।

জাহাজে মোট নয়জন কর্মী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দগ্ধ হওয়া চার কর্মচারীকে রাতেই বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.