সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচের আগে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ‘৯’ সংখ্যাটি সবারই মুখে মুখে। সিঙ্গাপুর নারী দলের ৯ নম্বর জার্সিধারীকে নিয়েই এই আলোচনা। কিন্তু আলাদা করে তাঁকে নিয়ে আলোচনা কেন!
তাঁর নাম দানিলে ট্যান। শুক্রবার প্রথম ম্যাচে তিনি খেলেননি। বাংলাদেশের বিপক্ষে সে ম্যাচে ৩-০ গোলে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে সিঙ্গাপুরের মরোক্কান কোচ করিম বেনশেরিফা বলেছিলেন, ‘কাল (শনিবার) সকালে আমাদের একজন খেলোয়াড় আসছে জার্মানি থেকে।’
সেদিন থেকেই সেই ‘জার্মানি থেকে আসা’ খেলোয়াড়কে নিয়ে কৌতূহল। দানিলে ট্যানের প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা গেল, তাঁকে নিয়ে আলোচনার যথেষ্ট কারণ আছে। জার্মানির অন্যতম শীর্ষ ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের নারী দলে এ বছরের জুলাই মাসে যোগ দিয়েছেন তিনি। আগস্টে জার্মানির মেয়েদের লিগে অভিষেকের পর পারফরম্যান্সও যথেষ্ট ভালো। আজ কমলাপুর স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের অনুশীলনে দলের মিডিয়া ম্যানেজার তাঁকে চিনিয়ে দিলেন। তবে কথা বলার সুযোগ দেননি। দূর থেকে দেখে যা মনে হলো, কাল দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে হয়তো ডর্টমুন্ডের এই খেলোয়াড়কে নিয়ে আলাদা করেই পরিকল্পনা সাজাতে হবে বাংলাদেশ নারী দলের কোচ সাইফুল বারী টিটুকে।
অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের সঙ্গে অবশ্য দানিলে ট্যানের কথা হয়েছে। গতকাল দুই দলই অংশ নেয় এক ডিনার পার্টিতে। সেখানে ট্যানের সঙ্গে টুকটাক কথাবার্তা হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন নারী দলের অধিনায়ক, ‘সে গতকালই জার্মানি থেকে এসেছে। খানিকক্ষণ কথা হয়েছে ডিনার পার্টিতে। আমি নিজে থেকে কিছু জিজ্ঞেস করিনি, তবে তাঁর কথাবার্তায় জার্মানির প্রসঙ্গ বেশ কয়েকবার এসেছে। ওর সম্পর্কে আলাদা করে যা জেনেছি, তাতে মনে হলো, যথেষ্ট ভালো খেলোয়াড়।’
কালকের ম্যাচে কোচ বেনশেরিয়া ট্যানকে খেলাবে কি না, সেটি নিশ্চিত নয়। কোচকে জিজ্ঞেস করতে সরাসরি উত্তর পাওয়া গেল না। এটাই স্বাভাবিক। একটা রহস্য রাখতে চাচ্ছেন তিনি। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি সিঙ্গাপুর। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বভাবতই কোচ চাইবেন ভিন্ন কোনো পরিকল্পনায় বাংলাদেশ দলকে ঘায়েল করতে।
দানিলে ট্যানকে নিয়ে এত আলোচনার কারণটা অবশ্যই জার্মানি লিগের দল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুরের স্টিল এরিওনের হয়ে খেলা শুরু করা ট্যান দুই মৌসুম খেলেছেন লায়ন সিটির হয়ে। এরপর অল্প সময় লন্ডন বিসে কাটিয়ে গত জুলাইয়ে যোগ দিয়েছেন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে। সেখানে প্রাক্-মৌসুমে একটা টুর্নামেন্টে ৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জিতেছেন। অ্যালেমেনিয়া আখেনের বিপক্ষে গোল করে যাত্রাটা শুরু করেছিলেন। প্রাক্-মৌসুমে ৬ ম্যাচে ৩ গোল তাঁর। আগস্টে জার্মানির মেয়েদের লিগে অভিষেকের প্রথম ম্যাচেই ডিজেকে এসপিভিজিজি হের্টানকে ডর্টমুন্ড হারিয়েছে ১৩-০ গোলে। সে ম্যাচে তিনটি অ্যাসিস্টের পাশাপাশি ট্যান করেছেন হ্যাটট্রিকও। ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। সিঙ্গাপুরের মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের হয়ে দেশের জার্সিতে অভিষেক হয় ২০১৯ সালে। এরপর খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। দ্রুতই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে যান। এখন পর্যন্ত ২০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। গোল করেছেন ৪টি।