সংবিধান সংস্কারে ১৯ প্রস্তাব কমিশনে জমা দিল জাপা

0
8
ঢাকার বনানীতে দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংবিধান সংস্কারে প্রস্তাব তুলে ধরেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। গত বৃহস্পতিবার, ছবি: সংগৃহীত
এক ব্যক্তির দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, সরকারি দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি না হওয়া, ৭০ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনসহ সংবিধানের ১৯ দফা সংস্কারের প্রস্তাব করেছে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)। প্রস্তাবগুলো দলের পক্ষ থেকে চার সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদল ইতিমধ্যে সরকারের গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের দপ্তরে জমা দিয়েছে। জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের গত বৃহস্পতিবার বনানীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্কার প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন।
 
জি এম কাদের বলেন, সংবিধানকে আরও জনবান্ধব করতে এবং একক ব্যক্তির বা প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণ হ্রাস করার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে তাঁরা সংস্কার প্রস্তাবগুলো তৈরি করেছেন।
 
সংস্কার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে জাতীয় পার্টি। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রস্তাব হচ্ছে, সংসদ সদস্যদের নিজ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে সংসদে ভোটদানের সুযোগ থাকবে। তবে তাঁরা সেটা করতে পারবেন যখন দলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে সুস্পষ্ট বিভাজন দেখা দেবে এবং দলীয় সংসদ সদস্যদের কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। ৭০ অনুচ্ছেদকে সেভাবে পরিবর্তন করার প্রস্তাব করে দলটি। তারা মনে করে, এর ফলে দর-কষাকষি কিছুটা কঠিন হয়ে পড়বে এবং সংসদ অধিকতর কার্যকর ও সরকারের স্থায়িত্ব কিছুটা হলেও নিশ্চিত হবে। তবে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।
 
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রস্তাব করে জাতীয় পার্টি বলেছে, পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশকে অপরিবর্তনীয় করে তুলেছে, যা অযৌক্তিক। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করার কথা বলেছে।
 
এ ছাড়া রাষ্ট্রপতির নিয়োগ সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে না করে সংসদ সদস্যদের তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভোটে নির্বাচিত করার পক্ষে দলটি। এটি করা গেলে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী অনেকটা সর্বসম্মত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। সে জন্য জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রপতি নিয়োগের জন্য তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট অন্তর্ভুক্ত করতে অনুচ্ছেদ ৪৮(ক) সংশোধন করার কথা বলেছে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপতির অভিশংসনের জন্য সংসদের তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিধান প্রবর্তন করার প্রস্তাব করে দলটি সংবিধানের ৫২ নম্বর ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করেছে।
 
জাতীয় পার্টি বলেছে, বর্তমানে সংসদে সংরক্ষিত ৫০টি আসনে নারী সংসদ সদস্য মনোনয়নে সংসদ সদস্যদের একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ভোটদান পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। সেটি অক্ষত রেখে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে তাদের মোট প্রার্থীর কমপক্ষে ১০ শতাংশ নারী প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছে। তাঁরা সরাসরি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই প্রার্থীদের যাঁরা জয়ী হতে ব্যর্থ হবেন, মহিলা সংসদ সদস্য করার ক্ষেত্রে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছে দলটি। তাদের মতে, এই ব্যবস্থাটি ধীরে ধীরে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রয়োজনীয়তা কমাবে।
 
এ ছাড়া সরকারি দল এবং বিরোধী দল থেকে সংসদে দুজন ডেপুটি স্পিকারের বিধান থাকা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ গঠন, সুপ্রিম কোর্টকে সহায়তার জন্য ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়’ থাকা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সদস্যদের মনোনয়নের জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক একটি ‘অনুসন্ধান কমিটি’ গঠন এবং সেই অনুসন্ধান কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ সদস্য বিরোধী দল থেকে করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় পার্টি।
#FITV #explore #Bangladesh #Banglanews #everyone #AI

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.