‘শুধু প্রেমিকা আর বউ হয়ে অভিনয় করতে চাই না’

0
187
অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা

বরেণ্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘যাপিত জীবন’ নামে নির্মিত একই নামের সিনেমার শুটিং বেশ আগেই শেষ করেছেন তারকা অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। হাবিবুল ইসলাম হাবিব পরিচালিত সিনেমার ডাবিং চলছে এখন। ডাবিং নিয়ে ভাবনা বলেন, ‘শুটিং শেষ করেছি। শুটিং কেমন হয়েছে, তা দেখতে ডাবিংয়ের অপেক্ষায় ছিলাম। শুটিংয়ে যে সমস্ত ফুটেজ দিয়েছি সে ফুটেজগুলো ভালোই ছিল। অভিনেত্রী হিসেবেও নিজেকে দেখে মন্দ লাগেনি। ডাবিংয়ে প্রথম ঝলক দেখা যায়। পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ এখনও বাকি। সামনে কালারের কাজ হবে। আমরা ১৯৪৭ সালের সময়কে ধরার চেষ্টা করেছি। সবাইকে খুব ভালো লেগেছে। ওই সময়টা স্ক্রিনে পাওয়া গেছে। সিনেমায় পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি শেষ হওয়ার পরই বোঝা যাবে সিনেমাটি কেমন হয়েছে।’

সিনেমাটি নিয়ে ভাবনা আরও বলেন, ‘‘একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এটি বানানো হয়েছে। সেলিনা আন্টি [সেলিনা হোসেন] নিজে চেয়েছেন এই সিনেমাটি আসুক। অনেকেই জানেন কলকাতায় ‘যাপিত জীবন’ পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত। আমরা তো ১৯৪৭-এর সময় ছিলাম না। বই পড়ে পড়ে আমাদের জানতে হয়েছে। ভাষা আন্দোলন ও দেশভাগ সম্পর্কে জেনেছি। সেই দায়বদ্ধতা থেকে সিনেমাটি বানানোর চেষ্টা করেছেন নির্মাতা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা হবে বলে আমি মনে করি। সাধারণ সিনেমায় চাইলে একজন নির্মাতা যে কোনো জায়গায় শট নিয়ে নিতে পারেন। এখন ওই সময়ের ঢাকা শহরের শট নেওয়া অসম্ভব। যেজন্য কাজটি অনেক কষ্টসাধ্য ছিল।’’

ভাবনা অভিনীত আরেক সিনেমা ‘দামপাড়া’র সেন্সর হয়েছে। এতে ভাবনা অভিনয় করেছেন মাহমুদা হকের চরিত্রে। ভাবনা বলেন, ‘দামপাড়া’ সিনেমায় আমি যুদ্ধের সময়ের এক পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল হকের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছি তা কিন্তু নয়। শামসুল হকের স্ত্রী মাহমুদা হকের আলাদা একটি পরিচয় আছে সিনেমায়। সিনেমা আমাকে বাংলাদেশের ফিমেল অ্যামবাসাডর হিসেবে দেখানো হয়েছে। মাহমুদা হক এখনও বেঁচে আছেন। তিনি শামসুল হকের স্ত্রী একমাত্র নয়, তাঁরও অনেক ভূমিকা আছে সিনেমায়। ইনডিভিজ্যুয়াল একটি চরিত্র। চরিত্রটি সম্মানের। দুই সিনেমার বাইরেও ‘এক্সকিউজ মি’ নামে নতুন একটি সিনেমার কাজ শুরু করেছেন ভাবনা। ইতোমধ্যে গানের দৃশ্যধারণ হয়েছে। পুরো সিনেমার কাজ এখনও বাকি। রায়হান খান পরিচালিত এই সিনেমায় তাঁর বিপরীতে আছেন জিয়াউল রোশান।

অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা

 

সবসময় বাচ-বিছার করে যে কোনো সিনেমার কাজে হাত দেন। এ সিনেমার কাজে কেন আগ্রহী হলেন? ‘‘আমি এনার স্ত্রী, উনার প্রেমিকা– এ সব ধরনের চরিত্রে অভিনয়ে আগ্রহী নই। আমার নিজের চরিত্রের দম না থাকলে সেই সব চরিত্রে অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। অভিনেত্রী হিসেবে এমন চরিত্রে অভিনয় করতে চাই যেখানে আমার ভূমিকা আছে এবং আমি গুরুত্বপূর্ণ সেই গল্পে। শুধু প্রেমিকা ও বউ হয়ে অভিনয় করতে চাই না। এক্সকিউজ মি’র গল্পটা খুবই ওমেন ওরিয়েনটেড। এতে আমার অভিনীত ‘পায়েল’ চরিত্রটিতে কাজ করার অনেক জায়গা আছে। মোটকথা আমার ছবির গল্প পছন্দ হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এ কাজে রাজি হয়েছি।’’ বর্তমানে শুটিংয়ের চাপ একটু কম থাকায় ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোও দেখছেন ভাবনা। এ নিয়ে তাঁর ভাষ্য– ‘ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকটি সিনেমা দেখেছি। ভালোই হয়েছে সিনেমাগুলো। গতকালও একটি সিনেমা দেখেছি। দর্শক হলে যাচ্ছে। এটি অভিনয়শিল্পীদের জন্য আনন্দের সংবাদ বলে আমি মনে করি।’ দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব যখন বেশি ছিল তখন অনেকের মতো ভাবনার কেটেছে ঘরবন্দি সময়। এই সময়ে তিনি মনোযোগ দিয়েছিলেন আঁকাআঁকিতে। এখনও সময় পেলে বসে পড়েন ছবি আঁকায়। এক্সকিউজ মি’র শুটিংয়ের মাঝে এঁকেছেন তিনি। ভাবনা বলেন, ‘আঁকাআঁকি আমার ভালো লাগে। নিজেকে ব্যস্ত রাখতেই সৃজনশীল কাজগুলো করি।’

এমদাদুল হক মিলটন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.