ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর উপকূলীয় ওদেসা অঞ্চলে রুশ হামলায় রপ্তানিযোগ্য ৬০ হাজার টন শস্য ধ্বংস হয়ে গেছে। আজ বুধবার এ দাবি করেছে কিয়েভ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ হামলা হয়।
কিয়েভ জানায়, ওদেসা বন্দরের চারপাশে রাতভর রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। মস্কো ইচ্ছে করে শস্য টার্মিনালগুলোতে আঘাত হেনেছে—এমন অভিযোগ করার পরই ওদেসা বন্দরের আশপাশে হামলার ঘটনা ঘটল।
গত সোমবার কৃষ্ণসাগরীয় শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে সরে আসে রাশিয়া। এরপর টানা দুই রাতে ওদেসা অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে হামলা সত্ত্বেও ইউক্রেন শস্য রপ্তানি অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।
ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওদেসার বাইরে চর্নোমোরস্ক বন্দরে হামলায় ৬০ হাজার টন শস্য ধ্বংস হয়েছে। এই শস্যগুলো ৬০ দিন আগে শস্য করিডর দিয়ে পাঠানোর কথা ছিল।
হামলায় ইউক্রেনের কার্নেল, কানাডার ভেতেরা ও ফ্রান্সের সিএমএ সিজিএ গ্রুপের মতো আন্তর্জাতিক ও ইউক্রেনীয় শস্য বাণিজ্য ও পরিবহন কোম্পানিগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বিশ্বে খাদ্যনিরাপত্তা আবার ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শস্য রপ্তানির অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর মস্কো কৃষ্ণসাগর হয়ে শস্য রপ্তানির ভবিষ্যৎ ‘ঝুঁকি’র মুখে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে।
এই চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় বিশ্বের অতি দরিদ্রদের চড়া মূল্য দিতে হবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলো চুক্তি থেকে মস্কোর বেরিয়ে যাওয়ায় নিন্দা জানিয়েছে।
তবে ওদেসায় ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে হামলার সব লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে বলেও দাবি করেছে মস্কো।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগোর কোনাশেঙ্কভকে উদ্ধৃত করে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস বলেছে, ওদেসা শহরের কাছে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক শিল্প স্থাপনা, জ্বালানি অবকাঠামো ও গোলাবারুদ মজুত লক্ষ্য করে সাগর থেকে ছোড়া নিখুঁত অস্ত্রের মাধ্যমে হামলা চালিয়েছে রুশ ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনী।
ইগোর কোনাশেঙ্কভ আরও বলেন, এ ছাড়া কিরোভোগ্রাদ অঞ্চলে ইউক্রেনের কানাতোভো বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয়েছিল। হামলার সব লক্ষ্যই অর্জিত হয়েছে।