রাতে ঢাকার রাস্তায় নারী চিকিৎসককে গাড়িতে তুলে নির্যাতনের অভিযোগ

0
139
নির্যাতনের অভিযোগ করা নারী চিকিৎসকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ভিডিওতে নারী চিকিৎসক বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি হাসপাতালে দায়িত্ব পালন শেষে রিকশায় তাঁর লালবাগের বাসায় ফিরছিলেন। সঙ্গে তাঁর ছোট ভাইও ছিলেন। এ সময় একটি প্রাইভেট কার এসে তাঁর রিকশার গতি রোধ করে। নাজমুল ও আকাশ নামের দুজন গাড়ি থেকে নেমে তাঁকে রিকশা থেকে টেনে নামান। তখন গাড়ির ভেতরে ছিলেন হাসান ও মশিউর। তাঁরা সবাই তাঁর পূর্বপরিচিত।

ওই নারী বলেন, ‘আমি রাস্তায় কথা বলতে না চাইলে তাঁরা আমাকে জোরপূর্বক টেনে গাড়ির ভেতরে নিয়ে মাঝখানে (পেছনের আসন) বসান। এ সময় আমার ছোট ভাইকে রিকশা থেকে লাথি মেরে ফেলে দেন তাঁরা। আমি চিৎকার দিয়েছিলাম। কিন্তু আশপাশে কেউ ছিল না।’

ওই নারী আরও বলেন, মশিউর গাড়ি চালাচ্ছিলেন। রাস্তাও অন্ধকার ছিল। একপর্যায়ে লালবাগ থানার কাছে পৌঁছে যান তাঁরা। তখন রাস্তার পাশের রিকশার গ্যারেজগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘এ সময় তাঁরা আমাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করে। এতে আমার শরীর কেটে–ছিঁড়ে গেছে। একপর্যায়ে আমি জোর করে গাড়ির দরজা খুলি এবং পড়ে যাই।’ এ সময় পাশের রিকশার গ্যারেজ থেকে লোকজন ছুটে এসে তাঁকে টেনে তোলেন বলে জানান তিনি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।

ওই নারী চিকিৎসককে ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘মূলত আমার ওপর ওদের জেলাসি ছিল। কারণ, আমি আমার কাজিনের ব্যবসা দেখাশোনা করতাম। হাসান ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ছিল। একজন ড্রাইভারের একের পর এক চুরির ঘটনা আমি ধরিয়ে দিই। এসব ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একের পর এক চুরির মামলা হয়েছিল। আমি ওই মামলার সাক্ষী ছিলাম।’

আজ সন্ধ্যায় ওই নারীর মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, এখন খুব অসুস্থ। পরে কথা বলবেন। র‍্যাব-১০ কথা বলতে নিষেধ করেছে বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সন্ধ্যায় লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ মোরশেদ বলেন, ওই নারী নিজেকে লালবাগের ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক পরিচয় দিয়েছেন। সেখানে যোগাযোগ করে জানা যায়, এই নামে তাদের কোনো চিকিৎসক নেই। তিনি বলেন, ঘটনাটি ‘পূর্বশত্রুতার জের ও সাজানো’ বলে তাঁর মনে হচ্ছে। তবুও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় গতকাল রাতেই দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা ও নারী শিশু নির্যাতন আইনে চার আসামি—নাজমুল, হাসান, আকাশ ও মশিউরের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছেন। আজ রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে নাজমুল ও হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.