নতুন বছরের প্রথম ১০ দিনের মধ্যেই দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। সংস্থাটি বলছে, খেজুরের রস পান করে রাজশাহীর বাসিন্দা ওই নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
আজ বুধবার ‘শীতকালীন সংক্রামক রোগ ও নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ’ শীর্ষক আইইডিসিআর আয়োজিত মেডিকেল সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন।
বলা হয়, ২০২২ সালে নিপাহ ভাইরাসে তিনজন আক্রান্ত হয়েছিলেন; তাঁদের মধ্যে দু’জনই মারা যান। তাঁদের একজন ছিলেন নওগাঁর ও অন্যজন ফরিদপুরের। গবেষণার বরাত দিয়ে আইইডিসিআর পরিচালক তাহমিনা শিরিন বলেন, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৭১ শতাংশ মানুষই মারা যান। তাই কাঁচা খেজুরের রস পান থেকে বিরত থাকতে হবে।
আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০০১ সালে মেহেরপুরে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ২০০৩ সালে হয় নওগাঁয়। তবে ২০০৪ সালে সবচেয়ে বড় আকারের প্রাদুর্ভাব হয় ফরিদপুর জেলায়। সে বছর ফরিদপুরে নিপাহ ভাইরাসে ৩৫ জন আক্রান্ত হন, তাঁর মধ্যে ২৭ জনই মারা হন। ২০০১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ৩২৫ জনের দেহে নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৩০ জনই মারা গেছেন।
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, বাদুরের মূত্র বা লালার মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়ায়। বাদুর যখন খেজুরের রস খায়, তখন রস ইনফেকটেড বা দূষিত হয়ে যায়। মানুষ সেই রস কাঁচা খেলে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তারপর আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে তাঁর পরিবারের সদস্য ও পরিচিতদের দেহে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
তিনি পরামর্শ দেন, কাঁচা খেজুরের রস ও বাদুরের অর্ধেক খাওয়া ফল খাওয়া যাবে না। দূষিত খেজুরের রস পানের পর নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিতে ৮-৯ দিন লাগতে পারে। আর আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা দেয় ৬-১১ দিন পর।
আইইডিসিআর গবেষকদের মতে, খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে খেলে তা নিরাপদ। গুড়ও নিরাপদ। রস সংগ্রহের পর গাছিদের সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।