লিওনেল মেসি তো কবেই চলে গেছেন। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে ধরে রাখতে চেয়েও পারেনি পিএসজি। এরপর তারা নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপ্পের ভেলায় চেপে ইউরোপ–শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট নিয়ে আসার স্বপ্ন দেখছিল।
কিন্তু কোথায় কী! মেসি চলে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার কদিন পরই এমবাপ্পে চিঠি দিলেন। সেই চিঠিতে তিনি লিখেছেন—এ মৌসুমের পর আর পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে চান না। এরপর ঘোষণা এল নেইমারের কাছ থেকে—তিনিও প্যারিস ছাড়তে চান।
এমবাপ্পের ওপর রেগে গিয়ে তাঁকে মূল দলের বাইরে পাঠিয়ে দেয় পিএসজি। নেইমারের সঙ্গে সেটা না করলেও তাঁকে ফ্রেঞ্চ লিগ ‘আঁ’তে লোরিয়াঁর বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচের স্কোয়াডে রাখেনি। এ দুজনকে ছাড়া পিএসজির আক্রমণভাগ হয়ে যায় নখদন্তহীন। লোরিয়াঁর বিপক্ষে নিজেদের মাঠে কাল গোলশূন্য ড্র–ই করতে পেরেছে পিএসজি।
এটা হয়তো আগেই বুঝতে পেরেছিল পিএসজি। এ কারণেই লোরিয়াঁ ম্যাচের আগে এমবাপ্পের সঙ্গে আলোচনায় বসে পিএসজি কর্তৃপক্ষ। সেই আলোচনায় তাঁকে চুক্তি নবায়নের প্রস্তাবও দেওয়া হয়। সেটা এক বছরের জন্য। এমবাপ্পে চুক্তি নবায়ন করবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু বলেনি পিএসজি। তবে এমবাপ্পের বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ফরাসি স্ট্রাইকারকে মূল দলে ফেরাচ্ছে।
বিবৃতিতে তারা লিখেছে, ‘লোরিয়াঁ ম্যাচের আগে পিএসজি ও এমবাপ্পের মধ্যে খুব গঠনমূলক ও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আজ সকালেই সে মূল দলের অনুশীলনে ফিরবে।’
এর আগে ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম কানাল প্লুস খবর দিয়েছে, চুক্তি নবায়ন করা নিয়ে এমবাপ্পের সঙ্গে আলোচনায় বসবে পিএসজি।
এমবাপ্পের সঙ্গে পিএসজি কর্তৃপক্ষের লেগে যাওয়ার কারণ একটিই—তিনি ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিও করবেন না, আবার চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ না করেও যাবেন না। অর্থাৎ আগের চুক্তি অনুযায়ী এমবাপ্পে ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে ক্লাব ছাড়তে চান। আর চুক্তি নবায়ন করবেন না বলে চিঠি দেওয়ার পরই তাঁকে বিক্রি করার জন্য উঠেপড়ে লাগে পিএসজি।
এমবাপ্পেকে এবারের দলবদলেই বিক্রি করতে মরিয়া প্যারিসের ক্লাবটি। আর না হলে যে এমবাপ্পে মুক্ত খেলোয়াড় হয়ে যাবেন। তখন তাঁকে বিক্রি করে ট্রান্সফার ফি পাবে না তারা। অন্যদিকে এমবাপ্পে চুক্তির মেয়াদ পূর্ণ করতে চান আনুগত্য বোনাসের পুরোটা পাওয়ার জন্য।
পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যেতে চান এমবাপ্পে। রিয়াল মাদ্রিদ হয়তো অপেক্ষায় আছে এমবাপ্পে মুক্ত খেলোয়াড় হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে বিনা ট্রান্সফার ফিতে নেওয়ার জন্য। এসব নিয়ে এমবাপ্পের ওপর রেগে গিয়ে পিএসজি তাঁকে বম্ব স্কোয়াডে পাঠিয়ে দেয়। সাধারণত অতি বেতনের খেলোয়াড়, যাঁরা প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেন না কিংবা ক্লাব আর যাঁদের দরকারি মনে করে না, তাঁদের যখন মূল দল থেকে আলাদা করে ফেলা হয়, তাঁদের ‘বম্ব স্কোয়াড’-এর সদস্য বলা হয়।
কিন্তু লোরিয়াঁর বিপক্ষে ম্যাচের আগে আলোচনার পর বিষয়টি ঘুরে গেছে বলেই মনে হয়। এমবাপ্পে এক বছরের জন্য চুক্তি নবায়ন করার পর আগামী বছর তিনি রিয়ালে যেতে চাইলে অসুবিধা নেই পিএসজির। এতে দুই কুলই রক্ষা পাবে ক্লাবটির—এ মৌসুমে মাঠের খেলায় সংকটে পড়বে না এবং আগামী বছর বিক্রি করলে ট্রান্সফার ফিও পাবে।