ভারতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, দেশে ফিরে যা বললেন মমতাজ

0
234
মমতাজ বেগম

ভারতের মুর্শিদাবাদের অনুষ্ঠান আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শক্তি শঙ্কর বাগচীর দায়ের করা মামলায় ৯ আগস্ট গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে। আদালত যেদিন এই আদেশ দেন, ওই সময়টায় কানাডায় একটি অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন মমতাজ। দেশে ফেরার পর দুই দিন পূর্বনির্ধারিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অংশ নিয়েছিলেন। আজ বুধবার ভারতের আদালতের রায় নিয়ে মুখ খুললেন মমতাজ। নিজের ফেসবুক পেজে অবস্থান তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছেন।
মমতাজ ফেসবুকে লিখেছেন, এই কথা সত্য যে অনেক বছর আগে ভারতের বহরমপুর কোর্টে আমার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি একটা মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেন, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল আমাকে ভয় দেখিয়ে কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়া। একই সঙ্গে ওই ব্যক্তি ছাড়া আমি যেন কারও মাধ্যমে ভারতে কোনো কনসার্ট করতে না পারি।

শক্তি শঙ্কর বাগচী জানিয়েছেন, ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের জন্য তাঁর সঙ্গে মমতাজ বেগম লিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি মোতাবেক শক্তি শঙ্করের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মমতাজ বেগম নিয়মিত অংশ নিতেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ১৪ লাখ রুপিতে মুর্শিদাবাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য চুক্তিতে আবদ্ধ হন। মমতাজ অর্থও গ্রহণ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করেন শক্তি শঙ্কর বাগচী। এটিকে মিথ্যা মামলা বলে জানিয়েছেন মমতাজ। মমতাজ বলেন, ‘কোনো ডকুমেন্ট ছাড়া ১৪ লাখ টাকা নেওয়ার একটি মিথ্যা মামলা উনি (শক্তি শঙ্কর বাগচী) সাজিয়েছেন, যার কোনো প্রমাণ এই ১৪–১৫ বছরে আদালতে দাখিল করতে পারেননি।

Prothom alo image
মমতাজ বেগম, ছবি : সংগৃহীত

এই বছর আমি দুবার আদালতে হাজির হই, কিন্তু দুঃখের বিষয়, মামলার বাদী দুবারই অসুস্থ বলে কোর্টে অনুপস্থিত থাকেন। তার মূল উদ্দেশ্য আমাকে হয়রানি করা। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দ্রুত এই মামলাটি যাতে শেষ হয়, বিজ্ঞ আদালতকে অনুরোধ করি। কিন্তু আদালত শেষ যে তারিখটি দিয়েছিল ওই সময়ে আমার আগে থেকেই কানাডায় প্রোগ্রাম নেওয়া ছিল বিধায় উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে আমি আদালতকে এ বিষয় অবহিত করি এবং পরবর্তী সময়ে একটা সময় চাইলে বিজ্ঞ আদালত সেটা গ্রহণ করে আমাকে সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ পুনরায় তারিখ দেন।’

মমতাজ আশা করছেন, তিনি ৮ সেপ্টেম্বর হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত একটা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং পরবর্তী করণীয় কি তা জানতে পারবেন তিন। তাঁরমতে, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

Prothom alo image
মমতাজ বেগম

গত রোববার দুপুরে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শক্তি শঙ্কর বাগচীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে এই মামলা চলছে। আমিও এই মামলার শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব। এই মামলায় আজ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার সেদিনের ১৪ লাখ রুপি অগ্রিম নিয়ে অনুষ্ঠান না করায় বহু আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। আমি ন্যায়বিচার চাই। আমার অগ্রিম অর্থ সুদসহ এবং মামলার সব খরচসহ আমার ১৫ বছরের হয়রানির ক্ষতিপূরণের টাকা চাই।’

শক্তি শঙ্কর বাগচী আরও বলেন, ‘এই মামলায় লড়তে আমি ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছি। আবেদন করেছি। আমি চাই, আমার এই দীর্ঘ ১৫ বছরের মামলা চালানোর খরচ এবং অগ্রিম প্রদত্ত অর্থসহ যাবতীয় ক্ষতিপূরণের টাকা। সেই সঙ্গে মমতাজ বেগমের এই প্রতারণা এবং চুক্তিভঙ্গের জন্য যথাযথ শাস্তি।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.