ভবিষ্যতের জন্য ডলার বুকিং, দাম হবে ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা

0
176
মার্কিন ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের ভবিষ্যৎ দাম (ফরওয়ার্ড রেট) নির্ধারণে নতুন নিয়ম চালু করেছে। এ জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ হারও। নতুন নিয়মে এক বছর পর ব্যাংক ডলারের দাম বর্তমানের চেয়ে স্মার্ট হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি নিতে পারবে। গতকাল রোববার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নিয়ম চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে এখন ঋণের সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে, সেটি পরিচিত স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে। প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। জুলাইয়ে স্মার্ট রেট ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। আগস্টে তা বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা চলতি সেপ্টেম্বরেও অপরিবর্তিত রয়েছে।

কেউ এখন ভবিষ্যতের জন্য ডলারের বুকিং দিয়ে রাখলে তাঁকে এক বছর পর প্রতি ডলারে ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা পরিশোধ করতে হবে। আর মাসভিত্তিক দাম হলে তা মাস হিসাবেই কমে আসবে। বর্তমানে আমদানিতে ডলারের দাম ১১০ টাকা।

আমদানিকারকদের কাছে বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল নতুন নিয়মটি চালু করেছে। অথচ এসব ব্যাংকের কয়েকটি ভবিষ্যৎ দাম আদায় করতে গিয়ে আমদানিকারকদেরর কাছ থেকে বেশি দাম রেখেছিল বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ১০ ব্যাংক হলো মার্কেন্টাইল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ট্রাস্ট ব্যাংক। আরও কিছু ব্যাংককে শাস্তির আওতায় আনা হতে পারে বলে সূত্রগুলো জানায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক

ডলার ক্রয় ও বিক্রয় উভয় ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ দাম নির্ধারণ করা যায়। কোনো আমদানিকারক এখনই ডলার কিনে এক বছরের মধ্যে পণ্য আমদানি করতে পারেন। এ জন্য তাঁকে বর্তমান ডলারের সঙ্গে ব্যাংককে বাড়তি কমিশন দিতে হয়।

ওই সময়ে দাম কমে গেলেও আমদানিকারককে বর্তমান দাম দিতে হবে। আবার দাম বেড়ে গেলে তিনি সুবিধা পাবেন। অর্থাৎ বাড়তি দাম দিতে হবে না। এদিকে রপ্তানিকারকও নির্দিষ্ট সময় ডলার বিক্রি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দাম কমে গেলে রপ্তানিকারক লোকসানেও পড়তে পারেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময়ে সময়ে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে। ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম প্রতি মাসেই বাড়ছে।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাস থেকে পণ্য বা সেবা খাতের রপ্তানি আয়ের ডলার ও প্রবাসী আয়ের ডলার কেনায় দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। আগে ব্যাংকগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতি ডলারের জন্য প্রবাসীদের ১০৯ টাকা ও রপ্তানিকারকদের ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা দিত।

অন্যদিকে ব্যাংকগুলো এখন আমদানিকারকদের কাছে ১১০ টাকায় ডলার বিক্রি করছে। আগে আমদানি দায় মেটাতে ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের কাছে প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করত। তবে অভিযোগ আছে, বাস্তবে এই দামে ডলার কেনা-বেচা হচ্ছে খুব কম।

সব ব্যাংক নিজেদের ঘোষিত দামেই ডলার বিক্রির কথা বলে। ১০ হাজার ডলারের বেশি হলে দাম নির্ধারিত হবে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। ঘোষিত দামে নয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.