বেনামি চিঠি পেয়ে কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় নিখোঁজ ছাত্রীর খালাশাশুড়ি গ্রেপ্তার

0
166
নিখোঁজ কলেজছাত্রী লামিয়া আক্তার

নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির আজ সকালে বলেন, নিখোঁজ লামিয়ার ঘরের সামনে ফেলে যাওয়া বেনামি চিঠির সূত্র ধরে একটি কঙ্কাল পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে কঙ্কালের ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে। বেনামি চিঠির সূত্র ধরে নিখোঁজ কলেজছাত্রীর স্বামী তরিকুল ইসলামের খালা রেক্সনা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলেজছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগে করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।

কলেজছাত্রী নিখোঁজের চার মাস পর পরিবার পেল বেনামি চিঠি, কঙ্কাল উদ্ধার

পুলিশ ও নিখোঁজ ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, লামিয়া আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের মো. তরিকুল ইসলামের (২২) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বছরের ৩০ মে বিয়ের দাবিতে তরিকুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থান নেন লামিয়া। এরপর স্থানীয় লোকজনের মধ্যস্থতায় তাঁদের বিয়ে হয়। তবে তরিকুলের মা-বাবা এই বিয়ে মেনে না নেওয়ায় লামিয়া বাবার বাড়িতে চলে আসেন। তরিকুল বিভিন্ন সময়ে লামিয়ার বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন।

গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে লামিয়াকে নিয়ে বের হন তরিকুল। এর পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন এই কলেজছাত্রী। তরিকুল ইসলামের বাড়িসহ সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে মেয়ের খোঁজ করেন লামিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম। গত ৭ ডিসেম্বর নিখোঁজ লামিয়া আক্তারের মা রাজিয়া বেগম স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত হন, ঘটনার দিন রাতে তরিকুল ও লামিয়া একসঙ্গে ছিলেন। এরপর ২৫ ডিসেম্বর তরিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখসহ নয়জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অপহরণের মামলা করেন রাজিয়া বেগম।

ঘটনার চার মাস পর গত রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে লামিয়ার ঘরের চালে ও বেড়ায় ঢিল ছুড়ে মারা হয়। এতে তাঁর পরিবারের লোকজন ভয় পেয়ে এক আত্মীয়কে ডাকেন। তিনি এসে ঘরে ঢোকার সময় সিঁড়ির ওপর মাটির চাকা দিয়ে চাপা দেওয়া কাগজ পান। ওই কাগজে লেখা ছিল, ‘তোমাদের মেয়ের লাশ মোজাহার মোল্লার বাড়ির পশ্চিম পাশে বালুর মাঠের মধ্যে রাখা আছে’। ওই চিঠিতে আরও লেখা ছিল ‘সব জানে মেজ খালা’। রাতেই লামিয়ার পরিবার পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহারা বসায়। গতকাল সকালে বালুর মাঠ খনন করে একটি কঙ্কাল পাওয়া যায়।

লামিয়া আক্তারের খালা সাবিনা বেগম বলেন, উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল লামিয়ার হবে। লামিয়ার স্বামী তরিকুলসহ পরিবারের লোকজন তাঁকে তুলে নিয়ে হত্যা করেন। লামিয়া বিয়ের পর তরিকুলকে তাঁদের বাড়িতে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। অপর দিকে তরিকুলের পরিবার লামিয়াকে তালাক দেওয়ার জন্য বলছিল। একপর্যায়ে দুই পরিবার বসে সিদ্ধান্ত হয় দুই লাখ টাকা লামিয়াকে দিয়ে বিবাহবিচ্ছেদ করার। ওই টাকা যাতে না দিতে হয়, সে জন্য লামিয়াকে তাঁরা খুন করে লাশ গুম করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.