ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস- ক্রিকেটে খুব প্রচলিত এই কথাটার সার্থক চিত্রায়ণ দেখা গেছে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিংয়ে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দৃষ্টিকটু ভুল করেছেন দলের ফিল্ডাররা, আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে প্রতিপক্ষ দলগুলো। বিশ্বকাপের সেই বাজে ফিল্ডিংয়ের ধারাবাহিকতা বাংলাদেশ ধরে রেখেছিল শ্রীলংকা সফরের ওয়ানডে সিরিজেও। সব দেখেশুনেই তাই ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের কাছ থেকে জবাবদিহিতা চেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। কোচ অকপটেই জানিয়েছেন, ফিল্ডিংয়ের ‘বেসিক’ কিছু ব্যাপারেই সমস্যা আছে দলের ক্রিকেটারদের। এবার তাই পাইপলাইনে থাকা ক্রিকেটারদের ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিং নিয়েও নতুনভাবে চিন্তা করছে বোর্ড।
এক-দুটি ম্যাচ বাদে বিশ্বকাপে প্রায় প্রতি ম্যাচেই বাংলাদেশের ফিল্ডিং খোরাক জুগিয়েছে নানান সমালোচনার। প্রতিপক্ষের বিপজ্জনক ব্যাটসম্যানের সহজ ক্যাচ না ধরতে পারা এবং পরে সেই ব্যাটসম্যানের বড় ইনিংসের কাছে ম্যাচ হেরে যাওয়া- সেই তিক্ততার স্বাদও পেয়েছে দল। বাউন্ডারি আটকানোর ক্ষেত্রেও খুব একটা কার্যকর ছিলেন না ফিল্ডাররা। এমনকি ক্ষিপ্রতার অভাবে প্রতিপক্ষকে সিঙ্গেলের বদলে ডাবলও উপহার দিয়েছেন অনেকেই। বিশ্বকাপের পর শ্রীলংকা সফরেও ফিল্ডিংয়ে উন্নতির সামান্যতম লক্ষণ দেখা যায়নি। নির্বিষ বোলিংয়ের সঙ্গে যাচ্ছেতাই ফিল্ডিং- দুইয়ে মিলে বিশ্বকাপের মতো ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছিল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও।
গতকাল বিসিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানান, বোর্ডের প্রশ্নে ফিল্ডিং কোচ বলেছেন ফিল্ডিংয়ের মূল বিষয়গুলোর ব্যাপারে ক্রিকেটারদের জ্ঞানের ঘাটতির কথা, ‘ফিল্ডিং কোচকে আমরা জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ফিল্ডারদের এমন পারফরম্যান্সের কারণ কী। সে অনেক কিছুই বলেছে, কিছু ব্যাপার দেখিয়েছে। এর মধ্যে একটা ব্যাপার আমাদের কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। সে বলেছে, একজন ক্রিকেটার যখন জাতীয় দলে আসে তখন তার ফিল্ডিংটা উন্নত করা যায়, কিন্তু বেসিক শেখানো যায় না। এই বেসিক তাদের শিখতে হবে দলে আসার আগেই। এ কারণে ফিল্ডিংয়ের প্রতি আমরা বাড়তি নজর দিচ্ছি।’
সেই বাড়তি নজরটা কেমন হবে, তারও একটা ধারণা দিলেন বোর্ড সভাপতি। বললেন, জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটাররা যেন ফিল্ডিং নিয়ে আরও বেশি কাজ করে, সেটার ব্যাপারে নজর রাখবে বোর্ড। ব্যাটিং-বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ের পারফরম্যান্সও সমানভাবে বিবেচনা করা হবে বলেও জানান তিনি, ‘কেউ রান না পেলে তাকে বাদ দেওয়া হয়, কেউ উইকেট না পেলে তাকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু ফিল্ডিংয়ের কারণে কেউ বাদ পড়ে না। এটা পরিবর্তন করতে হবে। ফিল্ডিংকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। এইচপি, অনূর্ধ্ব-১৯, ‘এ’ দল থেকেই ফিল্ডিংয়ের বেসিক শেখানো শুরু করতে হবে। ভালো ফিল্ডিংয়ের জন্য ফিটনেসটাও জরুরি, সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি। এগুলো ঠিকঠাক করতে পারলে আশা করি আগামী দুই বছরের মধ্যে আমরা একটা ভালো দল পাব।’