রশিদ–মুজিবদের নামই নিলেন না সাকিব

0
126
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান

বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে কিছু দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়। কোচ আর অধিনায়কের উইকেটের পাশে দাঁড়িয়ে আলোচনা তেমনই এক দৃশ্য। দলের অন্যান্য সদস্যরাও অনুশীলনের ফাঁকে এসে দেখে যান উইকেট, বুঝতে চেষ্টা করেন উইকেট কেমন হবে, সেটি।

আজও এমন দৃশ্য দেখা গেল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। উইকেটের পাশে দাঁড়িয়ে আলাপ করতে দেখা গেল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। সঙ্গে ছিলেন কিউরেটর গামিনি ডি সিলভা। ভারতীয় কিউরেটর সঞ্জীব আগারওয়াল চাকরিচ্যুত হওয়ার পর থেকে সিলেট স্টেডিয়ামের উইকেটের দেখভাল করছেন গামিনি ও তাঁর সহকারী কবির হোসেন।

সাকিব নিশ্চিত প্রত্যেকেই নিজেদের দুর্বলতার জায়গা নিয়ে কাজ করছেন
সাকিব নিশ্চিত প্রত্যেকেই নিজেদের দুর্বলতার জায়গা নিয়ে কাজ করছেন

কিন্তু উইকেট নিয়ে আলোচনা, কোচ আর অধিনায়কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকল। দলের বাকিরা একবারও উইকেট দেখতে যাননি। সিরিজ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক সাকিব নিজেই জানালেন, ‘আমার ধারণা, উইকেট নিয়ে কেউ খুব বেশি একটা কথাও বলেনি। আমি আর কোচ হয়তো একটু আলাপ করেছি, এ ছাড়া দু-একজন ক্রিকেটারও আর উইকেটের কাছে গিয়েছে কি না, জানি না। যেটা বলতে চাচ্ছি, কন্ডিশন নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।’

শুধু উইকেট নয়। নিজেদের মধ্যে প্রতিপক্ষ দলের শক্তিমত্তা নিয়েও কোনো কথা হচ্ছে না। আফগান স্পিন আক্রমণ কতটা ভয়ংকর হতে পারে, সেটা তো ওয়ানডে সিরিজেই দেখা গেছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে সাকিবকে রশিদ খান কিংবা মুজিব উর রেহমানদের নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

সিলেটে আজ অনুশীলনে সাকিব
সিলেটে আজ অনুশীলনে সাকিব

কিন্তু সাকিব সে প্রসঙ্গটা পাশ কাটিয়ে গেলেন এভাবে, ‘আমরা বিশেষ কোনো ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলিনি, চিন্তাও করিনি। যারা ব্যাটিং বা বোলিং করবে, আমি নিশ্চিত, তারা কী কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে সেটি নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছে। এটা আসলে কাউকে বলার বিষয় নয় এবং করারও বিষয় নয়। যে পরিস্থিতিতে যে আসবে, তার দায়িত্ব কীভাবে সে দলের জন্য ভালো পারফর্ম করতে পারে।’

রশিদদের স্পিন শক্তি নিয়ে আরও কিছু প্রশ্ন হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। কিন্তু সাকিবের মুখে একবারও তাদের স্পিনারদের নাম শোনা যায়নি। এটা যে বাংলাদেশ দলের কৌশলের অংশ, তা বোঝা গেল সাকিবের এই কথায়, ‘আমার মনে হয় আমরা দল হিসেবে তখনই ভালো খেলি যখন আমরা অন্য দলকে নিয়ে চিন্তা কম করি। আমরা যখন নির্ভার থাকি, নিজেদের খেলাটা কীভাবে ভালো করা যায়, সেই চিন্তা করি, নিজেদের জায়গা থেকে সবাই ১০-২০ শতাংশ বেশি উন্নতি করার চেষ্টা করি, তখনই আমাদের দল ভালো পারফর্ম করি। আমরা যখন নার্ভাস থাকি, প্রতিপক্ষ নিয়ে বেশি চিন্তা করি, কন্ডিশন নিয়ে বেশি ভাবি, তখন শতভাগ পারফরম করতে পারি না।’

প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবতেই চান না সাকিব
প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবতেই চান না সাকিব

আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের টি-টোয়েন্টি রেকর্ড থেকে আত্মবিশ্বাস নেওয়ার কিছু নেই। এখন পর্যন্ত ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ৩টি। সিলেটের মাঠেও রেকর্ড ভালো নয়। ২০১৮ সালে দুটি টি-টোয়েন্টি খেলে দুটিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে এই সংস্করণে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রেকর্ড আবার অনুপ্রেরণাদায়ী। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ দল ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে ৩-০ ব্যবধানে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজও জিতেছে ২-১ এ। দুটি সিরিজেই বাংলাদেশ খেলেছে আক্রমণাত্মক মেজাজে।

আফগানিস্তানের দুই সেরা খেলোয়াড়ের নামই উচ্চারণ করলেন না সাকিব
আফগানিস্তানের দুই সেরা খেলোয়াড়ের নামই উচ্চারণ করলেন না সাকিব

এই সিরিজেও সে ধারা বজায় রাখতে চান সাকিব, ‘ঘরের মাঠে সবশেষ দুটি সিরিজই আমরা ভালো খেলেছি। এটা আমাদের জন্য নতুন আরেকটি চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তান অবশ্যই ভালো দল। আমাদের চেষ্টা থাকবে, যেভাবে আমরা ক্রিকেটটা খেলছি, যেভাবে উন্নতি হচ্ছে, প্রতিটি ম্যাচেই সেভাবে পারফরম করার জন্য।’

এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে আফগান বোলারদের বেশি করে খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ দল। সাকিব ব্যাপারটিকে ইতিবাচকই মনে করেন, ‘বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ যদি চিন্তা করি, ওদের মুখোমুখি হওয়াটা, ওদের সম্পর্কে আরও একটি বেশি জানাটা ইতিবাচক।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.