নীলফামারীতে হচ্ছে চীনের প্রস্তাবিত হাসপাতাল, জায়গা পরিদর্শন করে বললেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক

0
22
চীনের প্রস্তাবিত হাসপাতাল স্থাপনের জায়গা পরিদর্শনে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. হারুন অর রশিদ। মঙ্গলবার নীলফামারী সদরের দাড়োয়ানীতে

চীন সরকারের উপহারের এক হাজার শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনের জন্য নীলফামারীতে জায়গা পরিদর্শন করেছেন রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. হারুন অর রশিদ। আজ মঙ্গলবার সকালে তিনি উত্তরা ইপিজেডের অদূরে জেলা সদরের দাড়োয়ানীতে সুতাকলের (টেক্সটাইল মিলস) পরিত্যাক্ত ২৫ একরের একটি জায়গা পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয়ের (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম) নির্দেশনা অনুযায়ী, রংপুরের আশপাশে যে জায়গাটি পরিদর্শন করেছিলাম, সেটি মোটেও সন্তোষজনক নয়। এরপরই নীলফামারীর জেলা প্রশাসক অতিদ্রুত এই জায়গার প্রতিবেদন আমাদের কাছে পাঠান। আমরা এই জায়গা পরিদর্শন শেষে সার্বিক দিক বিবেচনা করে অনেকটা পজিটিভ স্থানে আছি।’

দাড়োয়ানী টেক্সটাইল মিলটি জেলা সদরের দাড়োয়ানীতে ১০৮ দশমিক ৫২ একর জমিতে ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মিলটির কার্যক্রম দিন দিন সীমিত হয়ে এসেছে। এর পাশেই রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি ক্যাম্প। কাছেই উত্তরা ইপিজেডের অবস্থান। সেখানে বিনিয়োগকারী চীনের একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে দেশটির অসংখ্য নাগরিক অবস্থান করে কাজ করছেন। ইপিজেডটিতে বর্তমানে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে ৪০ সহস্রাধিক মানুষের। প্রস্তাবিত জায়গায় হাসপাতালটি স্থাপিত হলে ইপিজেডে অবস্থানকারী চীনের নাগরিকেরাসহ এলাকার সব মানুষ চিকিৎসার সুবিধা পাবেন।

দাড়োয়ানীতে টেক্সটাইল মিলের পরিত্যাক্ত জায়গাটিতে চীনের প্রস্তাবিত হাসপাতাল স্থাপন নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করেননি বলে জানান বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক। চীনের প্রস্তাবিত হাসপাতালটি পেতে বিভিন্ন জেলার বাসিন্দারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি তুলছেন। এ প্রসঙ্গে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ফেসবুকে যা লেখালেখি চলতেছে, এসব নিয়ে চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। চীন সরকারের প্রস্তাবিত এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নীলফামারীতেই হবে এবং এই স্থানেই হবে।’

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক জানান, ভৌগোলিক ও যোগাযোগের দিক বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রথম পছন্দের জায়গা এটি, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। উপদেষ্টা মহোদয় জানিয়েছিলেন, ১০ থেকে ১২ একর জায়গার কথা। কিন্তু এখানে ২০ থেকে ২৫ একর জায়গা রয়েছে। অতএব এখানে আরও সুন্দরভাবে কাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া পাশেই রয়েছে বিমানবন্দর। সড়ক এবং আকাশপথেও যোগাযোগব্যবস্থা অনেক ভালো। সবদিক বিবেচনায় নীলফামারী প্রথম পছন্দ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান, সিভিল সার্জন আবদুর রাজ্জাক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাইদুল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর জুবায়ের আল মামুন, জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার প্রমুখ।

নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. হারুন অর রশিদ দাড়োয়ানী সুতাকলের পরিত্যক্ত ২৫ একর জায়গা পরিদর্শন করেছেন। তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সেটি একটি রেডি প্লট। পাশে বিজিবি ক্যাম্প থাকায় নিরাপত্তা রয়েছে। রংপুর বিভাগের মধ্যবর্তী স্থান এবং সড়কের পাশে হওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা ভালো। কাউকে উচ্ছেদ করতে হবে না। সবদিক থেকে স্থানটি হাসপাতাল করার জন্য উপযোগী।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.