নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতাদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে আহত আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার সকালে আশরাফুল হক (২২) নামের ওই তরুণের মৃত্যু হয়।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শহরের জেলখানা মোড়ে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ঢোকার পথে দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছাদিকুর রহমান নিহত হন।
ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আশরাফুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
নরসিংদীতে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাদের শোভাযাত্রায় দুর্বৃত্তের গুলি, একজন নিহত
ছাত্রদলকর্মী আশরাফুল হক শহরের সাটিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তাঁর পিঠে গুলি লেগেছিল। অন্যদিকে নিহত জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছাদিকুর রহমানের মাথায় গুলি লেগেছিল। তাঁরা দুজনই শোভাযাত্রার সামনের দিকে ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গতকালের শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা জানান, ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে চার মাস ধরে তাঁরা আন্দোলন করছেন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছাদিকুর রহমানের নেতৃত্বে তাঁরা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন। এতে অন্তত ৫০টি মোটরসাইকেলে শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন। শহরের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণের পর জেলখানা মোড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পার হয়ে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল শোভাযাত্রাটি। এ সময় হঠাৎ গুলি করা হয়। এতে ছাদিকুরের মাথায় ও আশরাফুলের পিঠে গুলি লাগে। তাঁরা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং অন্তত পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ও শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা গুলিবিদ্ধ দুজনসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছাদিকুর ও আশরাফুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর নরসিংদী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা ও সদ্য বহিষ্কৃত সহসভাপতি মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া অভিযোগ করেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের নির্দেশে হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলার আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন মুঠোফোনে বলেন, ‘জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর থেকে পুলিশের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তারা আমাদের ওপর একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। এখন তারা নিজেরা নিজেরাই এসব ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে বলছে।’
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে ই খোদা গতকাল বলেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
