সচিবালয়ে প্রবেশে ফি বসাতে চায় সরকার

0
131
বাংলাদেশ সচিবালয়

জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের প্রবেশ ফি বছরে আড়াই হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে জননিরাপত্তা বিভাগ।

বেসরকারি ব্যক্তিদের প্রবেশ ফি প্রস্তাব করা হয়েছে বছরে পাঁচ হাজার টাকা।
সচিবালয়ে বেসরকারি গাড়ি প্রবেশে বছরে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা ফি আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কারও কার্ড হারিয়ে গেলে, নষ্ট হলে বা অন্য কোনো কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে আবার তা নিতে দুই হাজার টাকা ফি দিতে হবে। বেসরকারি ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই ফি পাঁচ হাজার টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি হিসেবে জননিরাপত্তা বিভাগ বলছে, সচিবালয় হচ্ছে দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র। এটি সংরক্ষিত, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব, সচিবদের কার্যালয় এখানে অবস্থিত। সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বেসরকারি ব্যক্তিরা বিভিন্ন মেয়াদের প্রবেশ পাস নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া সচিবালয়ে অনুষ্ঠেয় বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহণকারী ও দর্শনার্থীরা দৈনিক পাস নিয়ে প্রবেশ করেন। সচিবালয়ে নিরাপত্তা বাড়াতে দর্শনার্থী গেটে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। প্রবেশপথে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ডিজিটাল কার্ড, ভেহিক্যাল স্ক্যানারের মাধ্যমে আইডেনটিফিকেশন, ভেহিক্যাল স্টিকার, নজরদারি, ব্যাক-আপ রুম তৈরিতে প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে। এই ব্যয় তুলে আনার পাশাপাশি পরিচালনা-রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

জননিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সচিবালয়ের ওপর চাপ কমাতে মূলত ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢাকার গণি রোডে ১৭ একর জায়গার ওপর সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত। এখানে ১১টি ভবন ও ৬টি ক্যানটিন রয়েছে। সচিবালয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসা-যাওয়া করেন।বিপুলসংখ্যক যানবাহন সচিবালয়ে প্রবেশ করে। কিন্তু এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। ফলে প্রতিদিন সচিবালয়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়। সচিবালয়ে মানুষ ও যানবাহনের নিয়ন্ত্রণেই ফি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

তবে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সচিবালয়ে মানুষ ও যানবাহন সীমিত করতে চাইলে ফি আরোপের চেয়ে বরং নিরাপত্তার দিকটিতেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবটি ভালো নয় বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, প্রস্তাবটি নিয়ে আরও চিন্তাভাবনা করা দরকার।

অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, সচিবালয়ে প্রবেশ ফি নির্ধারণ করা হলে তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। তখন এক বছরের জন্য নির্ধারিত ফি দিয়ে অনেকে সচিবালয়ে যানবাহন নিয়ে ঢুকতে চাইবেন। মানুষ ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা তখন কঠিন হবে। তা ছাড়া যে কার্ড দেওয়া হবে, তার অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.