চালু হয়েছে একটি এলএনজি টার্মিনাল
ঘুর্ণিঝড় ‘মোকা’র কারণে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত শনিবার থেকে দেশে চরম গ্যাস সংকট শুরু হয়৷ গ্যাস স্বল্পতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যায়। এতে তীব্র হয় লোডশেডিং। তবে সোমবার গভীর সমুদ্রে থাকা একটি টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়। এতে গ্যাসের সরবরাহ বেড়েছে। এদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ না বাড়ায় লোডশেডিং এখনও কমেনি।
ঘুর্ণিঝড় ‘মোকা’র কারণে গত ১২ মে রাত ১১টা থেকে গভীর সমুদ্রে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দেয়, যা এখানও চলছে। গ্যাসের অভাবে চট্টগ্রাম, ঘোড়াশাল, মেঘনাঘাট, হরিপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রেগুলোর উৎপাদন একেবারে কমে যায়। সোমবার একটি টার্মিলাল থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু হলেও কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন শুরু হয়নি। কারণ পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না৷ মঙ্গলবার এ কেন্দ্রগুলো চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরেকটি এলএনজি টার্মিনালের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এটি মেরামতে সময় লাগবে।
পেট্রোবাংলার এক পরিচালক জানিয়েছেন, সোমবার সকাল থেকে সামিটের টার্মিনালটি চালু হয়েছে। এই টার্মিনাল থেকে ২৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। অন্য টার্মিনালটি গভীর সমুদ্র থেকে এলএনজি খালাস পয়েন্টের দিকে রওনা হয়েছে। আসতে আরও ৪-৫ দিন সময় লাগবে।
তিনি আরও জানান, আগামী ১৮ মে এলএনজি নিয়ে দুটি কার্গো আসবে। ওই কার্গো এলে এলএনজি সরবরাহ বেড়ে ৫০ ঘনফুট হবে।
পেট্রোবাংলার তথ্যানুযায়ী, সোমবার গ্যাস সরবরাহ করা হয় ২৪৪ কোটি ঘনফুট, যেখানে দৈনিক চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট৷
এ দিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে ৭৯ কোটি ঘনফুট, যেখানে চাহিদা ১৩০ কোটি ঘনফুট৷ কয়লা সংকটে রামপাল কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে৷ সোমবার বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল গড়ে ১০ হাজার মেগাওয়াটের নিচে৷ যেখানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল গড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট ৷
দুর্ভোগ চলছে : গ্যাস সংকট ও লোডশেডিংয়ের কারণে নাকাল গ্রাহকরা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছেন চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার গ্রাহকরা। গত দুদিন ধরে এই অঞ্চলের মানুষরা হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন। আবার অনেকেই বাড়িতে মাটির চুলায় রান্না করছেন। চট্টগ্রামের সিএনজি স্টেশনগুলো বন্ধ ছিল। তবে সোমবার দুপুরের পর থেকে চট্টগ্রামে গ্যাসের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হতে থাকে।
অন্যদিকে, রাজধানীর স্টেশনগুলোতে গ্যাসের চাপ অনেক কমে যাওয়ায় গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। এছাড়া বাসাবাড়িতেও গ্যাসের চাপ কম। এমনকি গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় রাজধানীর অনেক কারখানায় উৎপাদন কমে গেছে। আর রাজধানীতেই তিন চার ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেখা যায়৷
পিডিবির হিসেব অনুযায়ী, সোমবার সারাদেশে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়। এরমধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৮৫০, চট্টগ্রামে ৫১, খুলনায়৬৪, রাজশাহীতে ১৯০, কুমিল্লায় ৩০০, ময়মনসিংহে ১৯০, সিলেট ১১৯ এবং রংপুরে ১৯৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে। তবে বেসরকারি তথ্য মতে লোডশেডিং ছিল প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট ৷