গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান করা হচ্ছে। শিগগিরই তিনি সংস্থাটির প্রধানের চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের নভেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন নতুন এ সংস্থা গঠিত হয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আদলে। গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠিত হওয়ার পর থেকে সরকারের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে জনবলের অভাবে সংস্থাটির তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
আজমত উল্লা খানকে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে মুঠোফোনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পিএমের (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে কথা হয়েছে। বর্তমানে ওই পদে একজন সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। সেই পদে আজমত উল্লা সাহেবকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন পিএমের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত করা হবে।’
বিষয়টি এখনো আলোচনা পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছেন আজমত উল্লা। তিনি বলেন, ‘যেকোনো দায়িত্ব আমার কাছে এলে সেটি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি। দেখা যাক কী হয়। দায়িত্ব পেলে অবশ্যই আপনারা সবাই বিষয়টি জানতে পারবেন।’
গত ২৫ মে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ভোটে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের কাছে ১৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে হারেন নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা। এর আগে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটির প্রথম নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি। সেবার হারেন বিএনপির প্রার্থী প্রয়াত এম এ মান্নানের কাছে। নির্বাচনে পরাজয়ের দুই দিন পর গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আজমত উল্লাকে ডেকে পাঠান।
সেখান থেকে এসে গাজীপুর মহানগরের থানা, ওয়ার্ড ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীদের নিয়ে নির্বাচন–পরবর্তী মূল্যায়ন সভার ডাক দিয়েছেন আজমত উল্লা। গতকাল বুধবার মহানগরীর কাশিমপুর ও বিকেলে কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নেতারা জানান, দলের কিছু লোক বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। ভোটের দিন নৌকার কার্ড ঝুলিয়ে জাহাঙ্গীরের মায়ের হয়ে কাজ করেছেন। এ জন্য আজমত উল্লাকে হারতে হয়েছে।
দুটি সভাতেই প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এদিন রাত নয়টার দিকে কোনাবাড়ীর সভায় মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে বিশ্বাসঘাতকতার কাছে নৌকা হেরেছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে। সরকারের হাতেও কিছু ক্ষমতা থাকে। গাজীপুরবাসী যেন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত না হয়।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘১০ বছর ধরে এখানকার মানুষ নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর যেন বঞ্চিত না হন। তাই আজমত উল্লা খানের মতো ব্যক্তি যদি সেখানে (গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে) সুযোগ পান, তাহলে এ নগরবাসী উপকৃত হবেন। আমরা সরকারে থাকার কারণে সরকারের কাছে সে সুযোগ আছে। আমি আশা করি, নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য খুব দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’


















