খুলনা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ দুটি মোড়ের নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে নগরীর ‘শিববাড়ি মোড়ের’ নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ এবং বর্তমান ‘বঙ্গবন্ধু চত্বরের’ নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ শেখ আবু নাসের চত্বর’ নামকরণের এজেন্ডা নিয়ে আগামীকাল রোববার কেসিসির সাধারণ সভায় আলোচনা হবে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে।
কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল বেলা ১১টায় নগর ভবনে কেসিসির ১৯তম সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়েছে। এটাই বর্তমান মেয়র ও কাউন্সিলরদের শেষ সাধারণ সভা। এ সভার আলোচ্যসূচির ৫ নম্বরে রয়েছে ‘নগরীর শিববাড়ি মোড়ের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু চত্বর এবং বর্তমান বঙ্গবন্ধু চত্বরের (শেরে বাংলা রোড ও কেডিএ এভিনিউয়ের সংযোগস্থল) নাম পরিবর্তন করে শহীদ শেখ আবু নাসের চত্বর নামে নামকরণ প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ’।
কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম এই সভার নোটিশ দিয়েছেন।
এদিকে শুক্রবার রাতে সভার নোটিশটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে খুলনাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এই উদ্যোগের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন। আবার অনেকে কেসিসির এমন উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট খুলনার আহবায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবীর ববি বলেন, নগরীর শিববাড়ি মোড়ের নামটি ইতিহাস বিড়জিত এবং ঐতিহ্যবাহী। শিববাড়ি নাম পরিবর্তন না করার দাবি জানাচ্ছি।
একই সঙ্গে নগরীর রয়েলের মোড় থেকে শিববাড়ি মোড় পর্যন্ত সড়কটির নাম কেডিএ এভিনিউ থেকে পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ করা যেতে পারে বলেও মতপ্রকাশ করেন তিনি।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খুলনার সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, শত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী একটি জায়গার নাম সরিয়ে বঙ্গবন্ধুর নাম স্থাপন করা কি সঠিক সিদ্ধান্ত হবে? তা না করে নতুন কোনো সড়ক, এলাকা বা স্থাপনার নাম বঙ্গবন্ধুর নামে করলে কোনো সমালোচনা বা বিতর্ক হবে না।
খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল বিশ্বাস তার ফেসবক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহারে নীতিমালা হওয়া উচিৎ। যত্রতত্র বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে যেন বিতর্ক সৃষ্টি না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। যত্রতত্র নাম ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুকে সম্মানিত করতে গিয়ে যেন অসম্মানিত না করি।’
নগরীর বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আমিরুল খসরু তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নতুন নামে শিববাড়ি মোড়ের কোনো ফায়দা না হলেও কারো কারো নিশ্চয়ই হবে। অসীমের সঙ্গে তুলনীয় বঙ্গবন্ধুকে আমরা কবে যথাযথ সম্মান দেখাতে শিখবো?’
অন্যদিকে দুটি মোড়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত বলে ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত ইলিয়াস হোসেন লাবু। এজন্য তিনি সিটি মেয়রকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম বলেন, দুটি মোড়ের নাম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে আমি সিটি মেয়রের সঙ্গে কথা বলবো।
কেসিসি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, রোববার সাধারণ সভায় নাম পরিবর্তনসহ বেশ কিছু এজেন্ডা রয়েছে।
শিববাড়ি মোড়ের নাম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার বিষয়ে বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। দেখি কী করা যায়।