কাগজে–কলমে ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে রাখা হলেও বাস্তবতা এই জায়গাতেও ভিন্ন। দুই দল এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে তিনবার। একটি করে জয়, হার আর ড্র নিয়ে বিরাজ করছে সাম্যবস্থা। আবার অন্যভাবে চিন্তা করলে, মহানাটকীয় এই বিশ্বকাপে একের পর এক চমক দেখানোয় সূক্ষ্মতম ব্যবধানে এগিয়ে আছে জাপান। নিয়মানুবর্তিতার আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে দেওয়া দলটি বীরের বেশে শেষ ষোলোয় উঠলেও ক্রোয়াটদের অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আসতে হয়েছে।
তবে আজ কোনো এক দলের বিদায়ে আরেক দলের ইতিহাস সমৃদ্ধ হবে। ক্রোয়েশিয়া অবশ্য সাহস খুঁজে নিতে পারে বিশ্বকাপ থেকেই। মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই দলকে আলাদা করা না গেলেও বিশ্বকাপে জাপানের কাছে কখনো হারেনি ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ আসরে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা ডেভর সুকারের গোলে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ক্রোয়াটরা। আর আট বছর পরের ম্যাচটি শেষ হয়েছে গোল বন্ধ্যাত্বে। দুটিই ছিল গ্রুপ পর্বের ম্যাচ।
এবার ক্রোয়েশিয়াকে আরেক ধাপ সামনে দেখতে সবাই লুকা মদরিচের দিকেই চেয়ে থাকবেন। ৩৭ বছর বয়সী রিয়াল মাদ্রিদ তারকা আগের বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। কাতারেও দুবার জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। অধিনায়কের ওপর পূর্ণ আস্থা আছে ইয়োসিপ ইয়ুরানোভিচেরও। সংবাদ সম্মেলনে ক্রোয়াট ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘মদরিচ তরুণ খেলোয়াড়ের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছেন। মাঠে তাঁকে দৌড়াতে ও সর্বস্ব নিংড়ে দিতে দেখলে বাকিদের শরীরে অতিরিক্ত শক্তির সঞ্চার হয়। (জাপানের বিপক্ষে) খেলতে আমরা উন্মুখ।’
ক্রোয়াট কোচ জ্লাতকো দালিচ আজ কঠিন লড়াই দেখছেন। বলেছেন, ‘(গ্রুপ পর্বের ম্যাচে) স্পেন প্রথম গোল করার পর ভেবেছিলাম জাপান শেষ। কিন্তু ওরা হাল ছাড়েনি। জার্মানি, বেলজিয়াম, ডেনমার্কের ছিটকে যাওয়া প্রমাণ করে, প্রতিটি দলই শক্তিশালী।’
জাপান কোচ হাজিমে মরিইয়াসু অবশ্য স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন না। দলের সবাইকে শান্ত থেকে ক্রোয়াট–চ্যালেঞ্জ নেওয়ার প্রত্যয় তাঁর কণ্ঠে, ‘এক বা দুই শতাংশ সুযোগ সৃষ্টি হলেও সেটা লুফে নেব। এবার ড্র হলে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে এমনকি টাইব্রেকারে গড়াবে। সবকিছুর জন্যই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’