ছেলেদের অ্যাশেজে প্রথম টেস্ট জিততে পারেনি ইংল্যান্ড, এজবাস্টনে তীব্র লড়াই করেও শেষ দিনের শেষ ঘণ্টায় প্যাট কামিন্সদের কাছে ২ উইকেটে হার মেনেছেন স্টোকসরা। এজবাস্টন টেস্টের দুদিন পরই নটিংহামের ট্রেন্টব্রিজে শুরু হয়েছে মেয়েদের অ্যাশেজের একমাত্র টেস্ট।
আর এ ম্যাচেরই তৃতীয় দিনে দারুণ এক রেকর্ড গড়েছেন ইংল্যান্ডের টেমি বেমন্ট। প্রথম ইনিংসে ৩২ বছর বয়সী এই ব্যাটার খেলেছেন ৩৩১ বলে ২০৮ রানের ইনিংস। মেয়েদের অ্যাশেজ ইতিহাসে এটিই কোনো ইংলিশ ব্যাটারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। মেয়েদের টেস্ট ইতিহাসে এটি ডাবল সেঞ্চুরির অষ্টম ঘটনা।
আট ঘণ্টার বেশি সময় ব্যাটিং করে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও গড়েছেন বেমন্ট। ইংল্যান্ডের হয়ে এত দিন সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ছিল বেটি স্নোবলের। ১৯৩৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ১৮৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ডানহাতি উইকেটকিপার-ব্যাটার স্নোবল। সেটি ছিল স্বীকৃতি—নারী ক্রিকেটের সবে চতুর্থ ম্যাচ, ইংল্যান্ডেরও। ৮৮ বছর পর এবার ইংল্যান্ডের ৯৯তম টেস্ট ম্যাচে এসে স্নোবলকে টপকে গেলেন বেমন্ট।
২০০৯ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে আসা বেমন্ট অবশ্য এমন কীর্তি গড়বেন, কিছুদিন আগপর্যন্ত আশা করেননি। গত বছরের মাঝামাঝিতে ডানহাতি এই ব্যাটারকে কমনওয়েলথ গেমস ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। ক্যারিয়ার ওই সময়ই শেষ কি না, এমনও ভেবে ফেলেছিলেন বেমন্ট।
রেকর্ড গড়ার দিনে স্কাই স্পোর্টসকে সে সময়ের কথাই বলেছেন তিনি, ‘তখন আমি নিজেই জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমি কি আর খেলা চালিয়ে যাব? শেষ বলার সময় চলে এসেছে কি না, ভাবছিলাম। ভাবছিলাম, আমার সেরা সময় কি অতীত হয়ে গেছে কি না। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিলাম, না, আমার সময় শেষ হয়ে যায়নি।’
‘অ্যাশেজ’ থেকে জেগে ওঠা ব্রডের পানশালা
ক্রিকেটে আরও কিছু পাওয়ার আছে, এমন বিশ্বাস থেকে ক্রিকেট ছাড়েননি বেমন্ট। তবে অ্যাশেজে ডাবল সেঞ্চুরি করবেন, ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়ে যাবেন, এতটা তিনি ভাবেননি। গত সপ্তাহে ডার্বিতে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলেছিলেন বেমন্ট।
সেই ম্যাচে ২০১ রানের ইনিংস খেলার পরপরই এল মূল ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি, ‘আমি ভেবে পাচ্ছি না, কীভাবে দুই সপ্তাহে দুইটা ডাবল সেঞ্চুরি করলাম। (দ্বিতীয় দিন ১০০ রানে অপরাজিত থাকার পর) আগের রাতে যাঁরা আমাকে ডাবল সেঞ্চুরি আসছে বলে বার্তা পাঠিয়েছেন, তাঁদের বলেছিলাম, চুপ থাকো। তোমরা কুফা লাগাচ্ছ।’
মেয়েদের টেস্ট ক্রিকেটে বেমন্টের ২০৮ পঞ্চম সর্বোচ্চ ইনিংস। সর্বোচ্চ ইনিংস ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা পাকিস্তানের ব্যাটার কিরন বালুচের—২৪২। কিরন ও বেমন্টের মধ্যে আছেন যথাক্রমে মিতালি রাজ—২১৪ (২০০২), এলিসা পেরি—২১৩* (২০১৭), লুইস রোল্টন—২০৯* (২০০১)। এই তিনটি ইনিংসই ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
এবার ইংল্যান্ডেরও হয়ে ডাবল সেঞ্চুরির ইতিহাসে নাম তুললেন বেমন্টও।