কে হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি

0
144

পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন? বছরের শুরুতে এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে।

সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে আওয়ামী লীগে। বিএনপির আগ্রহ নেই। প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রত্যাশা জাতীয় পার্টির। তারা এ পদে আমলা চায় না।

আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। দুইবারের বেশি রাষ্ট্রপতি হওয়ার সাংবিধানিক সুযোগ না থাকায় তাঁর জায়গায় নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২৪ এপ্রিলের মধ্যেই ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নতুন কারও শপথ নেওয়ার কথা।

রাষ্ট্রপতির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিন থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা সংবিধানে বলা হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সে অনুযায়ী, ২৩ জানুয়ারি থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। এরই ধারাবাহিতকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগে বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন। পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে কথা বলবেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্বাচন কর্তা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এরপর তপশিল ঘোষণা করা হবে।

রাষ্ট্রপতি জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন না। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের ভোটে। রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ সদস্য হতে হয় না। তবে সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে একজনকে প্রস্তাবক এবং একজনকে সমর্থক হতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিজ পদে বহাল থাকবেন।

ক্ষমতাসীন দল তাদের আস্থাভাজন ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের মনোনীত প্রার্থীই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। সংসদে সংরক্ষিত আসনসহ ৩৫০টি আসনের মধ্যে ৩০২টি আওয়ামী লীগের। জাতীয় পার্টির ২৬টি, ওয়ার্কার্স পার্টির ৪টি, জাসদের ২টি, বিকল্পধারার ২টি, গণফোরামের ২টি, তরীকত ফেডারেশনের ১টি, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১টি এবং স্বতন্ত্র ৩টি আসন। বিএনপির সাতজন পদত্যাগ করায় সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব নেই। ওই সাত আসনে উপনির্বাচনের কার্যক্রম চলছে।

আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বিকল্পধারা, গণফোরাম এবং স্বতন্ত্র সদস্যদের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়ার আলোচনা নেই। জাতীয় পার্টি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বিকল্পধারা, গণফোরাম কিংবা স্বতন্ত্র হিসেবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা নেই।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেবে। অবশ্যই একজন দক্ষ, সাহসী, মেধাবী ও পরীক্ষিত ব্যক্তিই প্রাধান্য পাবেন। নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে ড. আব্দুর রাজ্জাকের প্রত্যাশা, সব রাজনৈতিক দল যাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে- সে বিষয়ে নতুন রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিতে পারেন। প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপও করা যেতে পারে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারের কোনো নির্বাচনের ব্যাপারেই বিএনপির আগ্রহ নেই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে জাতিরও কিছু যায়-আসে না। আর বর্তমান রাষ্ট্রপতির মতো নতুন রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেও সংকট উত্তরণে কিছুই প্রত্যাশা নেই বিএনপির। এখন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিএনপি বর্তমান অবৈধ সরকারের পতনের লক্ষ্যে এগোচ্ছে। এটাই রাজনৈতিক সংকট সমাধানের একমাত্র উপায়।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি পদে তাঁদের প্রার্থী না থাকলে এবং গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দেবে জাতীয় পার্টি। অবশ্য এর আগে দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে একজন পরীক্ষিত রাজনীতিককে প্রত্যাশা করছেন। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি পদে আমলা চাই না। কেননা, রাজনৈতিক ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি হলে তিনি রাজনীতির ভাষা বুঝতে পারবেন।’

রাজনৈতিক বিশ্নেষকদের মতে, এ বছরের শেষ দিকে কিংবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে তাদের আপত্তির বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। তারা নির্বাচনের সময়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পরিবর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে।

এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা নেই। সংবিধানের বাইরে যাওয়া অসম্ভব।

রাজনৈতিক বিশ্নেষকদের দৃষ্টিতে, এমন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের পাশাপাশি নির্বাচনের সময় কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা খুবই গুরুত্ব বহন করবে। তাই নির্বাচনকেন্দ্রিক যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় একজন দক্ষ, সাহসী, মেধাবী, পরীক্ষিত ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বিশ্বস্ত ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি করাটা জরুরি মনে করবেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক নেতারা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্নেষক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের কোনো সক্রিয় সদস্য কিংবা আওয়ামী লীগ মনোভাবাপন্ন কোনো বুদ্ধিজীবী রাষ্ট্রপতি হতে পারেন। তবে নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন রাষ্ট্রপতিকে ভুলে যেতে হবে, কোন দল তাঁকে নির্বাচিত করেছে। তাঁকে জনগণের প্রত্যাশার কথা ভাবতে হবে। তাহলেই জাতি আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে। আর এমন রাষ্ট্রপতিই জাতির প্রয়োজন।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আরও বলেন, নতুন রাষ্ট্রপতিকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রতি সমান আচরণ করতে হবে, যাতে সংকটকালে রাজনৈতিক দলগুলো তাঁর কাছে আস্থা খুঁজে পায়। আর মাঝেমধ্যে নিজের ক্ষমতাও প্রয়োগ করতে হবে।

সংবিধানের ৫০ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘একাদিক্রমে হউক না হউক- দুই মেয়াদের অধিক রাষ্ট্রপতি পদে কোনো ব্যক্তি অধিষ্ঠিত থাকিবেন না।’ ফলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আর সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে সংবিধান সংশোধন করে এক ব্যক্তির দুইবারের বেশি রাষ্ট্রপতি হওয়ার বিধান যুক্ত করা হলে, তাঁকে আবারও এই পদে প্রার্থী করার সুযোগ তৈরি হবে।

এমন জল্পনা প্রসঙ্গে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, আবদুল হামিদকে তৃতীয় মেয়াদের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করতে হলে সংবিধান পাল্টাতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংবিধান পাল্টানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

আবদুল হামিদ টানা প্রায় ১০ বছর ধরে রাষ্ট্রপতির পদে থাকা ছাড়াও আগে দুই দফায় স্পিকার ছিলেন। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, কে হচ্ছেন নতুন রাষ্ট্রপতি? কয়েকজনকে নিয়ে এই আলোচনা ঘুরপাক খাচ্ছে। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলের প্রার্থিতা নিয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ধরনের আলোচনা হয়নি। তবে এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম আলোচিত হচ্ছে।

তাঁদের মধ্যে রয়েছেন- স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনেক দিন ধরেই আলোচনায় রয়েছেন। বিশেষ করে আবদুল হামিদ দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাঁর নাম আলোচিত হচ্ছে। তিনি দ্বিতীয় দফায় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে আলোচনায় রয়েছে। তিনি পরপর তিন দফায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সঙ্গে মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন দক্ষতার সঙ্গে।

নতুন রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্য তালিকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নামও রয়েছে। তিনি তৃণমূল থেকে উঠে আসা রাজনীতিক। গাজীপুর-১ আসনের এমপি এবং গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। মন্ত্রিসভা সদস্যদের মধ্যে তিনি সিনিয়র।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নামও রাষ্ট্রপতি হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। তিনি টানা তিন দফায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য হন।

নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নামও শোনা যাচ্ছে। তিনি বর্তমানে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা এবং সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় দিয়েছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নামও রয়েছে নতুন রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্য তালিকায়। তিনি আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন- সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আগামী দিনের জন্য যাঁকে যোগ্য মনে করবেন, তিনিই হবেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি। তবে আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে কোনো সংকট সৃষ্টি হলে সাহসিকতা, দক্ষতা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে যিনি সংকট উত্তরণে সঠিক অবস্থান নিতে পারবেন, এমন একজনকেই রাষ্ট্রপতি করা হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন।

সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সীমিত। রাষ্ট্রের প্রধান হলেও রাষ্ট্রপতির তেমন কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই। সরকারপ্রধান কিংবা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতি। তবে সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, তিনি প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রধান বিচারপতি নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি পরামর্শ করতে বাধ্য নন। রাষ্ট্রপতির মেয়াদ হলো নির্বাচিত হওয়ার সময় থেকে পাঁচ বছর। এর আগে সরকার পরিবর্তন হলেও সংবিধানের বিধান অনুযায়ী তাঁর উত্তরসূরি দায়িত্ব না পাওয়া পর্যন্ত তিনিই রাষ্ট্রপতি থাকবেন।

আর যে সংসদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছে, ওই সংসদের মেয়াদে রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হলে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের প্রয়োজন পড়বে না। রাষ্ট্রপতির মৃত্যু বা অপসারণের ফলে পদ শূন্য হলে শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তবে ৩৫ বছরের কম বয়স্ক, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য এবং কখনও সংবিধানের অধীন অভিশংসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারিত হলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.