করোনার ধাক্কা রেমিট্যান্সে, শৃুধু কমছেই

0
131
ডলার,

রেমিট্যান্স কমার হার যেন থামছেই না। গত নভেম্বর পর্যন্ত টানা পাঁচ মাস কমার ধারায় রয়েছে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। প্রতি মাসে রেমিট্যান্স কমতে কমতে নভেম্বরে তা ১৫৫ কোটি ডলারে এসে নেমেছে। সবমিলে গত পাঁচ মাসে যে পরিমাণ অর্থ এসেছে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তা প্রায় ২১ শতাংশ কম। করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর হুন্ডি প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কারণে এমন হচ্ছে বলে সংশ্নিষ্টদের ধারণা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৮৬১ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। অথচ করোনার ব্যাপক সংক্রমণের মধ্যেও গত অর্থবছরের একই সময়ে আসে এক হাজার ৮৯ কোটি ডলার। এ হিসেবে গত পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ২২৯ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

জানতে চাইলে মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনার কারণে গতবছর হুন্ডি প্রায় বন্ধ ছিল। যে কারণে গতবছর ব্যাংকিং চ্যানেলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। এখন হুন্ডি আবার বেড়েছে। আবার অনেকে দেশে ফিরলেও নতুন করে বিদেশে যাচ্ছেন কম। এসব কারণে হয়ত রেমিট্যান্স কমছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে এই নভেম্বরে ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার অর্থ দেশে পাঠান প্রবাসীরা। অথচ আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ২০৭ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। এ হিসেবে শুধু নভেম্বরেই রেমিট্যান্স কমেছে ৫২ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে মোট ১৮৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর প্রতি মাসে একটু একটু করে কমে এ পর্যায়ে নেমেছে।

নভেম্বরে পাঠানো রেমিট্যান্সের মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২১ কোটি ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩১ কোটি, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে তিন কোটি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৪ লাখ ডলার।

এর আগে করোনার মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেকর্ড দুই হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠান। আগের অর্থবছরের চেয়ে যা ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। আগে কখনও রেমিট্যান্সে এত প্রবৃদ্ধি হয়নি। রেমিট্যান্সে ব্যাপক প্রবৃদ্ধিসহ আরও কিছু কারণে গত ২৪ আগস্ট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। রেমিট্যান্স কমা ও আমদানি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে এখন তা আবার কমতির দিকে। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে আমদানি বেড়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ।

রেমিট্যান্স কমার কারণে বৈদেশিক মুদ্রা সংকটেও রয়েছে কয়েকটি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের কাছে গত আগস্ট থেকে ২০০ কোটি ডলারের মতো বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভ কমে গত ২৪ নভেম্বর ৪৪ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। পাশাপাশি গত তিন মাসে প্রতি ডলারে এক টাকা বেড়ে এখন আন্তঃব্যাংকেই ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.