নতুন এই সিদ্ধান্তে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার সুযোগ কমবে। দেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।
ইসলামী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকেরা (ব্রাঞ্চ ম্যানেজার) আর কোনো ঋণ দিতে পারবেন না। এমনকি বিভাগীয় ও জোন প্রধানেরাও কোনো ঋণ অনুমোদন করতে পারবেন না। পাশাপাশি ঋণের সীমাও বাড়াতে পারবেন না তাঁরা। তবে কৃষি খাতে তাঁদের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা বহাল রাখা হয়েছে। ব্যাংকটির মোট ঋণের মাত্র ৩ শতাংশ দেওয়া হয়েছে কৃষিতে।
আগে সবক্ষেত্রে শাখা ব্যবস্থাপক ও জোন প্রধানেরা পদক্রম ভেদে সর্বোচ্চ ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদন করতে পারতেন, যার বড় অংশই যেত গ্রামীণ উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার সুযোগ কমে এসেছে। এখন সব ঋণ দেওয়া হবে প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদনে। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদন করতে পারবেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।
গত ১৯ জুন ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৩২৪তম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভাতেই পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেন আহসানুল আলম। তিনি চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে। এর আগে আহসানুল আলম ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা নেওয়ার পর এবারই প্রথম পরিবারের সদস্যদের ব্যাংকে যুক্ত করে এস আলম গ্রুপ।
ঋণ অনুমোদনসংক্রান্ত পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ২০ জুলাই শাখা পর্যায়ে চিঠি দেন ব্যাংকটির এমডি মোহাম্মদ মুনিরুল মওলা ও মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী। নানা অনিয়মের কারণে তারল্যসংকটে পড়ার পর বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক এমন সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে।
যোগাযোগ করা হলে একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকটির একক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। নিয়ন্ত্রণ একচেটিয়া করার জন্য ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৭ ব্যাংক থেকে বিদেশে টাকা পাচারের তথ্য নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে। মহামান্য আদালত তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকটি থেকে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের ঋণ নেওয়ার সুযোগ কমবে, যার প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতিতে। নামে-বেনামে ঋণ নেওয়ার জন্য তারা নতুন এই ফন্দি এঁটেছে।
এখন ঋণ কে দেবে
আগে জ্যেষ্ঠ মুখ্য কর্মকর্তা শাখা ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত থাকলে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ঋণ দিতে পারতেন। এর ওপরের পদের ব্যবস্থাপকদের ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদনের ক্ষমতা ছিল। আর বিভিন্ন অঞ্চলের প্রধান বা জোনাল প্রধানদের ঋণ অনুমোদনের সীমা ছিল ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত। সারা দেশে ইসলামী ব্যাংকের শাখা রয়েছে ৩৯৪টি। প্রতিটি শাখার অধীনে আছে একাধিক উপশাখা।
ঋণ অনুমোদনের ক্ষমতাসংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত যেকোনো ধরনের নতুন ঋণ বা ঋণের সীমা বৃদ্ধির অনুমোদন করবেন এমডি। ৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণ বা ঋণের সীমা বৃদ্ধির অনুমোদন দেবে ব্যাংকের নির্বাহী কমিটি। তবে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণের ক্ষেত্রে আগের ক্ষমতাই শাখা ব্যবস্থাপকদের হাতে বহাল থাকবে।
আর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়নের আওতায় ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদন করতে পারবেন এমডি। এর বেশি হলে তা নির্বাহী কমিটি ও পরিচালনা পর্ষদে যাবে। ফলে শাখা পর্যায় থেকে কৃষিঋণ ছাড়া অন্য কোনো ঋণ অনুমোদন দেওয়া যাবে না। তবে কৃষিঋণ অনুমোদনের ক্ষমতা তুলে না নিলেও তা বন্ধ রয়েছে বলে জানান ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা।
খুলনার একটি শাখার ব্যবস্থাপক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই অঞ্চলের নিম্নমধ্যম ও মধ্যম শ্রেণির অর্ধেক ব্যবসায়ী ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক। আগে তাঁরা কাঁচামাল কেনার জন্য সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতেন। আমরাই স্বল্প সময়ে তা অনুমোদন করে দিতাম। এখন ১ টাকাও দিতে পারছি না। প্রধান কার্যালয়ে ফাইল পাঠালেও তাতে কোনো সাড়া মিলছে না।’
অন্যদিকে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রামের একটি শাখার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আগে ভালো গ্রাহকেরা অল্প সময়েই ঋণ পেতেন। আমরা তাঁদের কোনো ঋণ দিতে পারছি না। এখন অনেক আমানতকারী এসে তাঁদের জমানো টাকার খোঁজখবর নিচ্ছেন।
কেন এমন সিদ্ধান্ত
ইসলামী ব্যাংকের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন, জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ঋণ বিতরণ ও ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষমতা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ব্যাংকটির ২০২২ সালভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, তাদের দেওয়া ঋণের ৫৩ শতাংশ শিল্প খাতে, ৩২ শতাংশ ব্যবসা বা ট্রেডিং খাতে ও ৬ শতাংশ আবাসন খাতে গেছে। ভোক্তা ও কৃষি খাতে ৩ শতাংশ করে ঋণ গেছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শাখা পর্যায়ে ব্যাংকটির বেশির ভাগ ঋণ প্রদান বন্ধ থাকবে।
যোগাযোগ করা হলে ইসলামী ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে আবার চালু করা হবে। বেসরকারি ও বিদেশি অনেক ব্যাংকেরই শাখা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ঋণ অনুমোদনের ক্ষমতা নেই।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মালিকানা চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের কাছে যাওয়ার পর নামে ও বেনামে বিভিন্ন শাখা থেকে ঋণের নামে টাকা বের করা হয়। এসব ঋণের বেশির ভাগের আকার ৯০০ কোটি টাকার মধ্যে। কারণ, ব্যাংকটির নির্বাহী কমিটি ৯০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদন করতে পারে।
এর বেশি ঋণ হলে তা অনুমোদনের জন্য পরিচালনা পর্ষদে পাঠানোই ছিল নিয়ম। এই সময়ে ব্যাংকটির নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন যথাক্রমে সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সেলিম উদ্দিন। জুনে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে যোগ দেন এস আলমের ছেলে আহসানুল আলম, আর গ্রুপটির মালিকানাধীন ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয় সেলিম উদ্দিনকে।
এখন ইসলামী ব্যাংক তারল্যসংকটে ভুগছে। আমানত যা জমা আছে, ঋণ গেছে তার চেয়ে বেশি। ফলে ঋণ-আমানতের অনুপাত সীমা ছাড়িয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিয়ে ব্যাংকটি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে চাহিদামতো টাকা জমা রাখতে না পারায় ব্যাংকটি নিয়মিত জরিমানা খাচ্ছে। এরপরও জমা হওয়া আমানত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা করছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ইসলামী ব্যাংকের কিছু হলে পুরো ব্যাংক খাতে এর প্রভাব পড়বে, ঝুঁকি তৈরি হবে। সরকারের সবুজ সংকেত না পাওয়ায় কিছু করা যাচ্ছে না। ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, এ ক্ষেত্রে তা–ও প্রয়োগ করা যাচ্ছে না।
ইসলামী ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যাংক খাতের মাধ্যমে আমদানি, রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ ব্যাংকটির মাধ্যমে হয়। ব্যাংকটিতে দুই কোটি গ্রাহক প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার আমানত রেখেছেন। এই আমানতকারীদের বড় অংশই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের।
শেয়ার ছেড়ে যাচ্ছেন বিদেশিরা
১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই ২০১১ সাল পর্যন্ত একরকম নির্বিঘ্নে ব্যাংকটি পরিচালনা করে আসছিল। ২০১১ সালের নভেম্বরে পরিচালক হতে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হলে দলটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্বে ভাটা পড়ে।
২০১৭ সালে একাধিক কোম্পানির নামে ২ শতাংশ করে শেয়ার কিনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ। ওই বছরের ৫ জানুয়ারি পদত্যাগে বাধ্য হন ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও এমডি।
এরপর দেশি ও বিদেশি শেয়ারহোল্ডাররা এক এক করে ব্যাংকটি ছেড়ে চলে যেতে থাকেন। ২০১৭ সালের এপ্রিলে সব শেয়ার বিক্রি করে দেয় স্থানীয় উদ্যোক্তা ইবনে সিনা ট্রাস্ট। এরপর ওই বছরের মে মাসে শেয়ার বিক্রি করে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যাংকটির শেয়ার ছেড়ে দেয় কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস। চলতি বছরের জুনে শেয়ার ও পরিচালক পদ ছাড়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। গত জুলাইয়ে শেয়ার ও পরিচালক পদ ছাড়ে সৌদি আরবের আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সি।
এখন দুজন বিদেশি পরিচালক ছাড়া সবাই এস আলম গ্রুপসংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন আহসানুল আলম, তিনি সাইফুল আলমের ছেলে। বর্তমানে দুজন বিদেশি প্রতিনিধি আছেন।
তাঁরা হলেন ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ আবদুল্লাহ আল-রাজি ও মোহাম্মদ আল মাদানি। বাকি পরিচালকদের বেশির ভাগ চট্রগ্রাম অঞ্চলের। এর মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ মালিকপক্ষের আত্মীয়। বাকি সবাই সাবেক শিক্ষক, ব্যাংকার, আমলা, বিচারক ও হিসাববিদ, যাঁরা এস আলম গ্রুপের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকটির পরিচালক হয়েছেন।
ব্যাংকটির একটি সূত্র জানিয়েছে, পরিচালকদের প্রতিটি সভায় অংশগ্রহণের জন্য প্রাপ্য ভাতার পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এর বিপরীতে তাঁরা মালিকপক্ষের স্বার্থ দেখে থাকেন। কেউ দ্বিমত পোষণ করলেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়।
তারল্য পরিস্থিতিও নাজুক
ব্যাংকগুলোয় যে পরিমাণ আমানত জমা হয়, তার সাড়ে ৩ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। প্রতি দুই সপ্তাহ শেষে রাখতে হয় ৪ শতাংশ অর্থ। নগদ এ জমা সিআরআর নামে পরিচিত। কোনো ব্যাংক চাহিদার যে পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে পারে না, তার ওপর ৯ শতাংশ হারে প্রতিদিন দণ্ড সুদ দিতে হয়।
এ ছাড়া গ্রাহকের জমা টাকার ১৩ শতাংশ নগদ, বন্ড, বিল বা বৈদেশিক মুদ্রা আকারে জমা রাখতে হয়। ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য এ হার সাড়ে ৫ শতাংশ। এটি বিধিবদ্ধ জমা বা এসএলআর নামে পরিচিত।
কোনো ব্যাংক এসএলআর চাহিদার যে পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে পারে না, তার ওপর দৈনিক সাড়ে ৮ শতাংশ হারে দণ্ড সুদ আরোপিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন ও ব্যাংক কোম্পানি আইনে এই দণ্ড সুদ মওকুফ করার কোনো সুযোগ নেই। গত ৩০ জুন ইসলামী ব্যাংকের সিআরআর ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। সেদিনের জন্য জরিমানা আরোপ হয়েছিল ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এই ব্যাংকের তারল্যসংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দণ্ড সুদের টাকাও পুরোটা জমা দিতে পারছে না। সে জন্য তারল্য পরিস্থিতির উন্নতি ও জরিমানার টাকা জমা দিতে ব্যাংকটিকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে শরিয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকও তারল্যসংকটে পড়েছে। এর মধ্যে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ছাড়া সব কটিই এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শুধু ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে দায় সেরেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোও অনিয়ম বন্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে শুরু করেছে। এর মধ্যে সাইফুল আলমের ব্যক্তিগত সচিব আকিজ উদ্দিন ও বড় ঋণ দেওয়ার দায়িত্বে থাকা মিফতাহ উদ্দিনকে ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছে ব্যাংকটি।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকটিকে শেষ করে দেওয়ার অংশ হিসেবেই এই গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাংকের পরিণতি ফারমার্স ব্যাংকের মতো হলে বড় আকারের ক্ষতির মুখে পড়বে অর্থনীতি। কারণ, এই ব্যাংক ৫০টি ফারমার্স ব্যাংকের সমান। ব্যাংকটির আমানতকারীদের এখন বোঝা উচিত, কোথায় টাকা রেখেছেন। কারণ, সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যাংকের বিষয়ে অন্ধ হয়ে গেছে। কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।