ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের পছন্দের স্থান। পর্যটনশিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নতুন এ ফৌজদারি আইনের কারণে বিদেশি পর্যটকদের ইন্দোনেশিয়ায় আসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এর কারণে দেশটির বৈশ্বিক জনপ্রিয়তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পর্যটন রাজস্ব বিপুলভাবে কমে যাবে।
তবে বালির গভর্নর ওয়াইয়ান কোস্তার বলেছেন, কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের বৈবাহিক অবস্থান পরীক্ষা করবে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ায় নতুন এ আইন এখনই কার্যকর হচ্ছে না। আইনের বিধিবিধান তৈরি করতে আরও তিন বছর লেগে যেতে পারে। তবে এর মধ্যেই নতুন এই আইন আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হতে পারে।
জাতিসংঘ বলছে, নতুন আইন দেশের মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করতে পারে। আর ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন আইন ‘ইন্দোনেশিয়ার মূল্যবোধ’ সমুন্নত রাখবে।
বিশ্বের অধিকাংশ পর্যটন হটস্পটের মতো বালি দ্বীপও করোনাকালে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। বালিতে প্রতি মাসে পাঁচ লাখের বেশি বিদেশি পর্যটক ঘুরতে আসেন। কিন্তু করোনাকালের পুরো ২০২১ সালে বিদেশি পর্যটকদের এ সংখ্যা মাত্র ৪৫-এ নেমে এসেছিল।
করোনা নিয়ন্ত্রণের পর সরকার ও পর্যটনশিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ খাতকে দারুণভাবে পুনরুদ্ধারের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তাঁদের ধারণা ছিল, এ খাত থেকে ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিতে বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনা সম্ভব হবে। কিন্তু নতুন এই আইন পাস হওয়ায় তাঁরা হতাশ হয়েছেন।
যদিও নতুন আইনের আওতায় ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকসহ অবিবাহিত বিদেশি পর্যটকেরাও পড়বেন বলে জানানো হয়েছিল। নানা সমালোচনার মুখে এবার বিদেশি পর্যটকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে দেশটির কর্মকর্তারা।
বালির গভর্নর ওয়াইয়ান কোস্তার গত রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বালি পর্যটকদের কাছে আগে যেমন নিরাপদ ও আরামদায়ক ছিল, ঠিক তেমনই থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, হোটেলে ওঠার সময় পর্যটকের বৈবাহিক অবস্থার প্রমাণপত্র দিতে হবে না। স্থানীয় কর্মকর্তারাও তাঁদের বৈবাহিক অবস্থার বিবরণ জানতে চাইবেন না।
দেশটির আইনবিষয়ক উপমন্ত্রী এডওয়ার্ড ওমর শরিফ হিয়ারিজ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘বিদেশি পর্যটকদের উদ্দেশে জোর দিয়ে বলছি, আপনারা ইন্দোনেশিয়ায় আসুন। কারণ, নতুন আইনে আপনাদের বিচারের আওতায় আনা হবে না।’
নতুন ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় বিয়ে না করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রেসিডেন্ট কিংবা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমাননা ও ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় আদর্শবিরোধী যেকোনো দৃষ্টিভঙ্গিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বিয়ে না করে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে যদি স্বামী, স্ত্রী, অভিভাবক বা সন্তানেরা অভিযোগ জানান, কেবল তখনই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিচারের আওতায় আনা হবে। তাই বিদেশি পর্যটকদের এই আওতায় পড়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে।