শুভ বড়দিন আজ। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবের দিন। এ উপলক্ষে সারাদেশে এ ধর্মের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের বারতা। ২ হাজার ২২ বছর আগের ২৫ ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেন খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট। বর্তমান ফিলিস্তিনের বেথলেহেমে কুমারী মাতার গর্ভে জন্ম নেন তিনি। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, তিনি ঈশ্বরের পুত্র। পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়া, মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করা এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার করতে প্রভু যিশুর এ ধরায় আগমন ঘটেছিল।
বড়দিন উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তাঁরা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বড়দিন উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। সরকারি-বেসরকারি রেডিও, টিভি ও সংবাদপত্র এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও প্রকাশনার মাধ্যমে দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরবে।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্ট ধর্মানুসারীরা আজ ধর্মীয় আচার ও প্রার্থনার আয়োজন করবেন। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনা আর ওমিক্রনের প্রভাবে গত দুই বছর সীমিত আকারে উদযাপন করা হলেও এ বছর বড় পরিসরে নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে বড়দিন। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার বাইরে সামাজিক-সাংস্কৃতিকসহ আনুষঙ্গিক আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছেন খ্রিষ্ট ধর্মালম্বীরা। দেশের সব গির্জাসহ খ্রিষ্টান পরিবারগুলো ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়ে, কেক তৈরি করে এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে বড়দিন উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে। রয়েছে বিশেষ খাবারের আয়োজন। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনেকে এ দিনটি বেছে নেবেন। সান্তা ক্লজ শিশুদের মধ্যে উপহার বিনিময়ের মাধ্যমে আনন্দে ভরিয়ে তুলবেন দিনটি।
রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জায় (পবিত্র জপমালার গির্জা), কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল এবং মণিপুরীপাড়া, বারিধারাসহ সব গির্জায় বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। গির্জার ভেতরে ঐতিহ্যবাহী জাঁকজমকপূর্ণ সাজসজ্জায় গোশালা স্থাপন, রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে। রঙিন বাতি ও প্রচুর জরি লাগিয়ে রঙিন করা হয়েছে, বর্ণিল আলোকসজ্জাও করা হয়েছে। সব গির্জার নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও র্যাব।
ঢাকার পাঁচতারকা হোটেলগুলো অবশ্য বড়দিনের ‘জাঁকজমকপূর্ণ’ আয়োজনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল, হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল, র্যাডিসন, লা মেরিডিয়ান, ওয়েস্টিন, ঢাকা রিজেন্সি হোটেলসহ সব অভিজাত হোটেলগুলোতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। হোটেলগুলোর লবিতে ‘ক্রিসমাস ট্রি’ নির্মাণ ও বড়দিনের কেক স্থাপন করা হয়েছে। আজ সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত থাকবে এসব আয়োজন। সকাল ও বিকেলে শিশুদের জন্য রয়েছে সান্তা ক্লজের উপহার অনুষ্ঠান এবং সবার জন্য বুফে ডিনারের ব্যবস্থা।