আওয়ামী লীগ–বিএনপি দুই দলেই অস্বস্তি

0
91
পাঁচ সিটি নির্বাচন

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, দুই দলকেই অস্বস্তিতে ফেলেছে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এ নির্বাচনে দলগতভাবে অংশ নিচ্ছে না ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। কিন্তু তারপরও এখন পর্যন্ত বরিশাল, সিলেট ও গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগ। বরিশাল ও সিলেটে মনোনীত প্রার্থী নিয়ে স্থানীয় নেতাদের দ্বন্দ্ব ও মান–অভিমান এবং গাজীপুরে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী তাদের এ অস্বস্তির কারণ।

অন্যদিকে এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েও স্বস্তিতে নেই বিএনপি। কারণ, জাতীয় নির্বাচনের আগে তাদের এ সিদ্ধান্ত মাঠে কতটুকু কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ইতিমধ্যে বিএনপি নেতা হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা শাহ নূর ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বরিশালেও প্রয়াত বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র আহসান হাবিবের ছেলে কামরুল আহসান প্রার্থী হতে চান। খুলনায় গত সিটি নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম এবং সিলেটে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবারও ভোট করতে আগ্রহী, এমন আলোচনা রয়েছে। এ ছাড়া দলটির স্থানীয় নেতাদের অনেকে পাঁচ সিটিতেই কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তৎপর হয়েছেন। এমন পটভূমিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো ‘উকিল সাত্তার মডেল’ নিয়েও শঙ্কা রয়েছে বিএনপিতে।

বিএনপির এখন বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পাঁচ সিটির নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাঁদের কেউ যেন প্রার্থী না হন, সেটা নিশ্চিত করা। আসলে তা কার্যকর করা কতটা সম্ভব হবে, দলটিতে সেই সন্দেহ রয়েছে।

তবে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অবস্থান থেকে বিএনপি এখন সরে আসতে রাজি নয়। দলটির নেতারা মনে করেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে ওই অবস্থানের পরিবর্তন করা হলে তাদের নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেছেন, তাদের দল কোনো কৌশলেই বা কোনোভাবেই সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে না। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, দলের স্থানীয় কোনো নেতা এ ভোটে অংশ নিলে তাঁকে নিজের দায়িত্বে তা করতে হবে। আর তখন দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে পাঁচ সিটিতেই তাদের প্রার্থী মনোনীত করেছে। কিন্তু গাজীপুরে দলের মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন ওই সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। সিলেটে আওয়ামী লীগ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে প্রার্থী করায় স্থানীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। বরিশালে বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে বাদ দিয়ে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতকে প্রার্থী করায় সেখানেও আওয়ামী লীগের একটা অংশের মধ্যে ক্ষোভ ও মান–অভিমান রয়েছে। এ তিন সিটিতে পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

আওয়ামী লীগ নেতাদেরও অনেকে ভোটের মাঠের চ্যালেঞ্জ এবং অস্বস্তির বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, দলের কেউ যাতে বিদ্রোহী প্রার্থী না হন, শেষ পর্যন্ত তাঁদের সেই চেষ্টা থাকবে। কারণ, জাতীয় নির্বাচনের আগে এ সিটি নির্বাচনে দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে তাঁরা একটি ভালো ভোট দেখাতে চান।

আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট। এরপর ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোট হবে।

বরিশালে মাঠে নেই আ.লীগের একাংশ, তৎপর বিএনপির অনেকে বরিশালে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। তবে এখনো দলটির মহানগর ও জেলা কমিটির নেতাদের প্রায় কেউই তাঁর পক্ষে মাঠে নামেননি। আবুল খায়ের আবদুল্লাহ প্রতিদিন যেসব গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা করছেন, সেখানেও দলের নেতাদের দেখা যাচ্ছে না। নগরের ৩০টি ওয়ার্ড কমিটির নেতারাও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামছেন না।

দলীয় সূত্র জানায়, বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ সাদিক আবদুল্লাহকে এবারও প্রার্থী করার প্রস্তাব পাঠিয়েছিল কেন্দ্রে। সাদিক আবদুল্লাহ বর্তমান মেয়র এবং বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বাবা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়াম লীগের সভাপতি এবং দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি অনেকটা এককভাবেই নিয়ন্ত্রণ করছেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। সাদিক মনোনয়ন না পাওয়ায় তাঁদের কর্মী–সমর্থকেরা মাঠে নামছেন না। ক্ষমতাসীনদের মনোনয়ন পাওয়া খায়ের আবদুল্লাহ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই। কিন্তু তাঁদের মধ্যে দূরত্ব রয়েছে।

আবুল খায়ের আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান বলেন, দলের এমন অবস্থান সম্পর্কে প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ঢাকায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করে এসেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পাশে আছেন বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং তাঁর সমর্থকেরা। প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরণের সমর্থক যাঁরা এত দিন কোণঠাসা ছিলেন, তাঁরাও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নেমেছেন। আর নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন হাসানাত আবদুল্লাহর অনুসারীরা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমাদের দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করব। আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ অচিরেই বরিশালে আসবেন, বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহও আসবেন। এরপর জেলা ও মহানগর কমিটির যৌথ সভা করে সম্মিলিতভাবে আমরা মাঠে নামব।’

বরিশালে আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিতেও অস্বস্তি আছে। এখানে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির প্রয়াত নেতা ও সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান ওরফে রূপণ। এ ছাড়া ২৫টি ওয়ার্ডে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার জন্য তৎপরতা চালাচ্ছেন।

কামরুল আহসান বলেন, তিনি দু–এক দিনের মধ্যেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন। গণসংযোগ, মতবিনিময়সহ মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছেন। দলের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।

বরিশাল নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান বলেন, বিএনপি এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না, এটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। এরপরও কেউ নির্বাচনে গেলে নিজ দায়িত্বে তা করবেন।

গাজীপুরে মাথাব্যথার কারণ জাহাঙ্গীর

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান। এখানে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১২ জন। তবে আওয়ামী লীগের অস্বস্তির কারণ তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। ২০২১ সালে একটি বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে জাহাঙ্গীর মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হন, দলীয় পদও হারান। পরে দল তাঁকে ক্ষমা করলে তিনি আবার দলের মনোনয়ন চান। মনোনয়ন না পেয়ে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। পাশাপাশি নিজের মাকেও প্রার্থী করেছেন। স্থানীয়ভাবে এটি নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বেশি।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি বিদ্রোহী প্রার্থী নই। আমি শুধু একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি, যে এই শহরটাকে নষ্ট করেছে। তাই আমি ও আমার মা প্রার্থী হয়েছি।’

গাজীপুরে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির সাবেক সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন মন্ডলও প্রার্থী হয়েছেন। তিনি এখন ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। শেষ পর্যন্ত এই দুজন মাঠে থাকলে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লাকে লড়তে হবে মূলত দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সঙ্গেই।

আজমত উল্লা খান বলেন, ‘কেউ যদি দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়, তবে তাদের বিষয়ে কিছু বলার নেই। তবে আমার বিশ্বাস, তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসবে।’

বিএনপি নেতা হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন, এমন আলোচনা থাকলেও তা হয়নি। তবে তাঁর ভাতিজা শাহ নূর ইসলাম প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বিএনপি নেতা নূর ইসলামের ছেলে। এ ছাড়া বিএনপির ১৬ জন স্থানীয় নেতা কাউন্সিলর পদে লড়তে চান।

হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপির কেউ নির্বাচনে নেই। শাহ নূর ইসলাম দলের কেউ নন। কোনো পদ-পদবিও নেই। তাই এ বিষয়ে বলার কিছু নেই।

সিলেটে আওয়ামী লীগে চাপা ক্ষোভ, বিএনপিতে সংশয়

সিলেট সিটি করপোরেশেন নির্বাচন ঘিরেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে অস্বস্তি কাজ করছে। এখানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রবাসী এই নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ায় স্থানীয় নেতাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মনোনয়ন পাওয়া ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’র মতো। এ নিয়ে দলের অনেকে ভেতরে–ভেতরে ক্ষুব্ধ। প্রকাশ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলেও ভেতরে–ভেতরে ক্ষুব্ধ। প্রচার-প্রচারণায় অনেকেই আন্তরিকভাবে কাজ করবেন না বলে আশঙ্কা আছে।

তবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মনোনয়নবঞ্চিত সব নেতাসহ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় দল এখন ঐক্যবদ্ধ।

অন্যদিকে দল বর্জন করলেও বিএনপির মনোনয়নে টানা দুবার সিলেটের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন, এমন গুঞ্জন আছে। ঈদের পর আরিফুল নিজের অবস্থান জানাবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে এখন পর্যন্ত তিনি অবস্থান পরিষ্কার করেননি। তাই তাঁকে নিয়ে বিএনপির ধোঁয়াশা কাটেনি।

আরিফুল হক চৌধুরী গতকাল শনিবার বিকেলে বলেন, আগামী ২৩ তারিখ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ। এর আগে নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে নগরবাসীর উপস্থিতিতে জনসভা করে নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেটে স্থানীয় বিএনপির অন্তত ১০০ নেতা, কর্মী ও সমর্থক সাধারণ ও নারী কাউন্সিলর পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।

সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, দলের সবাইকে নির্বাচন করতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। মেয়র কিংবা কাউন্সিলর, কোনো পদেই দলীয় নেতা-কর্মীরা যেন নির্বাচনে অংশ না নেন, সে নির্দেশনা রয়েছে।

খুলনা ও রাজশাহীতে কিছুটা নির্ভার আওয়ামী লীগ

খুলনায় গতবার বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এবারও তিনি নির্বাচন করতে আগ্রহী, এমন আলোচনা আছে। তিনি নিজেও মনে করেন, চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিটি নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া উচিত। তবে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে না গেলে তিনি প্রার্থী হবেন না।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছি। নতুন যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয় বা চূড়ান্তভাবে বিএনপি যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা মেনে নেব।’

অন্যদিকে কাউন্সিলর পদে লড়তে বিএনপির অনেক নেতা–কর্মী মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। বিএনপি সমর্থিত সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলর এবং দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ রকম অন্তত ১২ জন নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে। বেশির ভাগই প্রার্থী হওয়া নিয়ে দ্বিধায় আছেন। কেউ কেউ প্রার্থী হবেন বলে জানিয়েছেন। আবার কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে রাজি নন।

খুলনায় ক্ষমতাসীনদের প্রার্থী বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। এখন পর্যন্ত শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আওয়ামী লীগ অনেকটা নির্ভার। তারা সেভাবে নির্বাচনী কাজও এখনো শুরু করেনি।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। এখন পর্যন্ত তাঁর শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। সে কারণে রাজশাহীতে নির্ভার আওয়ামী লীগ। বিএনপির কোনো নেতাও এখন পর্যন্ত এখানে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এবার বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জন করছে। এখন তারা যদি অন্য কোনোভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় এবং আওয়ামী লীগের ভেতরের ক্ষুদ্র কোনো অংশ তাদের মদদ দেয়, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা আওয়ামী লীগের রয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, দুই দলের নেতারাই বলছেন, সিটি নির্বাচন নিয়ে নিজ নিজ দলের অস্বস্তি কাটানোর চেষ্টা তাঁরা করছেন। যদিও তা আসলে সম্ভব হবে কি না, সে ব্যাপারে তাঁরা নিশ্চিত নন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.