১৮ বছর প্যারিসের বিমানবন্দরে বাস করা সেই ইরানির মৃত্যু

0
180

১৯৮৮ সালে প্যারিসের চার্লস ডি গল বিমানবন্দরে বসবাস শুরু করেন মেহরান নাসেরি। বিমানবন্দরের লাল সোফায় বসে লেখা তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য টার্মিনাল ম্যান’ বই হিসেবে প্রকাশিত হয়। বইটি থেকে ‘দ্য টার্মিনাল’ সিনেমা তৈরি করেন বিশ্ববিখ্যাত পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। ২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে মেহরান করিমি নাসেরির চরিত্রে অভিনয় করেন টম হ্যাঙ্কস। ছিলেন অভিনেত্রী ক্যাথেরিন জেটা জোনসও। ঘটনাবহুল নাসেরির জীবনের পুরো চিত্রই উঠে এসেছে সিনেমায়। ২০০৬ সাল পর্যন্ত মেহরান করিমি নাসেরি বিমানবন্দরেই ছিলেন।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, নাসেরিকে শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কয়েক সপ্তাহ আগে বিমানবন্দরে ফিরে আসেন। সেখানেই তিনি মারা যান।

মেহরান করিমি নাসেরির জন্ম ১৯৪৫ সালে ইরানের খুজেস্তানে। মায়ের খোঁজে তিনি প্রথমে ইউরোপে যান। প্রথমে কয়েক বছর থাকেন বেলজিয়ামে। তাঁর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় দেশ থেকে বের করে দেয় ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি। এরপর তিনি ঠাঁই খোঁজেন ফ্রান্সে। বিমানবন্দরের ২ এফ টার্মিনালকে নিজের ঘর বানিয়ে ফেলেন। তাঁর চারপাশ দিয়ে লোকজন চলাচল করে। ট্রলি ঠেলে নিয়ে যান। তাঁর মধ্যে বসে তিনি নোটবুকে লেখেন জীবনের কথা। পড়েন বই আর পত্রিকা। তাঁর এই জীবনকাহিনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাঁকে ১৯৯৯ সালে শরণার্থী মর্যাদা দেয় ফ্রান্স। তা সত্ত্বেও ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি বিমানবন্দরেই কাটিয়ে দেন। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ‘দ্য টার্মিনাল’ ছবি থেকে যে অর্থ পেয়েছিলেন, তা খরচ করে একটি হোটেলে থাকা শুরু করেন। চার সপ্তাহ আগে তিনি আবার ফিরে যান ওই বিমানবন্দরে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন। সব মিলিয়ে ১৮ বছর বিমানবন্দরে কাটান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.