সবে স্কুলে পড়েন। তখন থেকেই প্রেমের প্রস্তাব পাওয়া শুরু। তবে হঠাৎ করেই ২০০২ সালে প্রেমের প্রস্তাব পাওয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে হাজারের বেশি প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানালেন অভিনেত্রী কুসুম শিকদার।
‘আমাকে বন্ধু, বন্ধুর বন্ধু, কাজিনের বন্ধুরা এতটাই পছন্দ করতেন যে বলে শেষ করা যাবে না। দেখা যেত প্রতিদিন প্রেমের প্রস্তাব পেতাম। কত যে প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছি, বলে শেষ করা যাবে না। হাজারের বেশি তো অবশ্যই হবে।’ হেসে কথাগুলো বলেন কুসুম।
অভিনেত্রী জানান, প্রথম প্রেমের প্রস্তাব পাওয়ার পর ভয়ে ছিলেন। তবে সেটা ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। কবে থেকে প্রেমের প্রস্তাব পান, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে বয়সে মেয়েরা নজরে পড়তে শুরু করে। আমার ১৩ বছর বয়স থেকে প্রেমের প্রস্তাব পাওয়া শুরু। দেখা যেত চিঠিতে কেউ প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। কেউ হাতে আমার নাম লিখে রাখতেন। তবে চিঠি বেশি পেয়েছি। দেখা যেত স্কুলে পড়াশোনার পরে প্রেমের প্রস্তাব সংখ্যা আরও বেড়ে গেল। এমনও হয়েছে এক দিনে একাধিক প্রেমের প্রস্তাব পেতাম।’
পড়াশোনার সময়েই কুসুম নাম লেখান লাক্স-আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায়। ২০০২ সাল তাঁর জীবনটাই বদলে দেয়। কারণ, প্রতিযোগিতায় তিনি চ্যাম্পিয়ন হন। এরপরে আরও বেশি নজরে পড়েন। তৈরি হতে থাকে ভক্তরা। ‘এই বয়সে আমি যত প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছি, তার অর্ধেক ২০০২ সালেই। সেরা হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা শুটিং যেখানেই গিয়েছি, প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছি। অভিনয় শুরু করলাম, সবাই চিনতে শুরু করল, পরে আরও বেড়ে গেল প্রস্তাব পাওয়া।’
এই অভিনেত্রী জানান, শুটিংয়ে গেলে প্রায়ই লক্ষ করতেন পরিচালক বা প্রযোজকের সঙ্গে কেউ আছে। সরাসরি তাঁরা কুসুমকে ভালো লাগার কথা বলতেন। কেউ ধরিয়ে দিতেন চিরকুট। তবে সময়ের সঙ্গে প্রেমের প্রস্তাবে এসেছে পরিবর্তন।
‘মুঠোফোন আসার পরে বেশির ভাগ প্রস্তাব আসত এসএমএসে বা ফোনে। একসময় বিষয়গুলো বেশ এনজয় করতাম। ফোনের পরে ফোন পেতাম। পরে যখন ফেসবুক এল, ইনবক্সের তখন থেকে নিয়মিত প্রেমের প্রস্তাব আসা শুরু। দেখা যায় ইনবক্স খুললেই প্রেমের প্রস্তাব। ১৩ বছর বয়স থেকে প্রেমের প্রস্তাব পাচ্ছি, কথা বলতে বলতেও মাত্র প্রেমের প্রস্তাব পেলাম। আমার ইউনিভার্সিটির এক বন্ধু মাত্র ইনবক্সে লিখেছে, সে আমাকে পছন্দ করে।’ কথাগুলো শেষ করেই হাসতে থাকেন এই অভিনেত্রী।
তবে শুধু দেশের মধ্যেই নয়, বিদেশের প্রবাসী ভক্তদের কাছ থেকেও পেয়েছেন প্রস্তাব। তবে প্রেমের প্রস্তাব পেলেও সেগুলো কোনোটাই মনঃপূত হয়নি বলে জানান কুসুম। ‘অনেকেই নিয়মিত নক দিয়ে কফি খেতে চায়। হয়তো ভালোবাসার জায়গা থেকে বলে, কিন্তু আমি আর কিছু বলি না। প্রায়ই বিদেশ থেকে অনেকে বলেন, আমার জন্য গিফট পাঠাবেন। বিভিন্ন সময় বাসায় প্রচুর গিফটও পেয়েছি। ভক্তদের ভালোবাসা পেয়েছি, এটাই আমার বড় প্রাপ্তি,’ বলেন তিনি।
দীর্ঘ ছয় বছর পরে সিনেমা দিয়ে গত বছর অক্টোবরে ফিরেছেন কুসুম। তাঁর পরিচালিত সিনেমাটির নাম ‘শরতের জবা’ মুক্তি পেয়েছে। একজন নারী হিসেবে সিনেমাটির শুটিং থেকে পরিচালনা, পোস্টের কাজ তিনিই করেছেন। সিনেমাটি এবার ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানারোমায় প্রিমিয়ার হয়। আবার ফিরছেন কবে, এমন প্রশ্নে কুসুম বলেন, ‘প্রেমের প্রস্তাবগুলো যেমন মনঃপূত হয়নি, তেমনি এখন যে প্রস্তাব পাই মনঃপূত হয় না। তবে শিগগির ভালো কাজ দিয়েই ফিরব।’