ইরানে পুলিশের হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হিজাববিরোধী বিক্ষোভের জেরে এবার অস্কারজয়ী অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তিকে আটক করেছেন দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শনিবার ইরানের গণমাধ্যম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, তারানেহ আলিদুস্তিকে দেশজুড়ে আন্দোলন সম্পর্কে ‘মিথ্যা ছড়ানোর’ অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
অভিনেত্রী তারানেহ আলিদুস্তি ইরানের বিখ্যাত নির্মাতা আসগর ফরহাদী পরিচালিত অস্কারজয়ী সিনেমা ‘দ্যা সেলসম্যান’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। সফল এই ইরানি অভিনেত্রীর ৮০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে ইনস্টাগ্রামে।
এক প্রতিবেদনে বিবিবি জানায়, গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া পোস্টে তারানেহ আলিদুস্তি বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য একজন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা করেছিলেন।
তারানেহ আলিদুস্তি ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘আপনার নীরবতা মানে নিপীড়ন ও নিপীড়কের সমর্থন করছে।’ একটি ছবি শেয়ার করে এতে তিনি ক্যাপশন দেন, ‘প্রতিটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যারা এই রক্তপাত দেখছে এবং সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তারা মানবতার জন্য কলঙ্ক।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ‘আল্লাহর বিরুদ্ধে শত্রুতার’ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর মোহসেন শেকারিকে ফাঁসি দেওয়া হয়। একজন ‘দাঙ্গাকারী’ হিসেবে তাকে অভিযুক্ত করে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনি তেহরানের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করেন এবং আধাসামরিক বাহিনীর একজন সদস্যকে কাটারির আঘাতে আহত করেন।
কিশোরী বয়স থেকেই এই অভিনেত্রী সিনেমার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি এ বছরের কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ‘লায়লাস ব্রাদার্স’ ছবিতে অভিনয় করেছেন।
ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এই বিধিগুলো তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির ‘নৈতিকতা বিষয়ক’ পুলিশ। এই পুলিশের একটি দল, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন। আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। এ ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় দেশজুড়ে। দেশটিতে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ গেছে কয়েকশ জনের। বিক্ষোভে অংশ নেন দেশটির তরুণ-তরুণীরা।