ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অভিযানের বিষয়ে ইরান তুরস্ককে আগেই জানিয়েছিল। আঙ্কারার মাধ্যমে ওয়াশিংটন তেহরানকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিল। দামেস্কের কনস্যুলেটের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের মাটিতে এ হামলা চালানো হয়।
রোববার (১৪ এপ্রিল) তুরস্কের একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
সূত্রটি জানায়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের পরিকল্পিত অভিযানের বিষয়ে ইরান এরই মধ্যে তুরস্ককে আগাম অবহিত করেছে। সূত্রটি আরও জানায়, আঙ্কারার মাধ্যমে ওয়াশিংটন তেহরানকে বার্তা দিয়েছে যে, যেকোনো পদক্ষেপ অবশ্যই নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকতে হবে। তুরস্ক গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের নিন্দা জানালেও ওই অঞ্চলে আরও উত্তেজনা বৃদ্ধি রোধের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুর্কি সূত্রটি জানিয়েছে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ইরানি অভিযানের পরিকল্পনা নিয়ে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সম্ভাব্য পরিস্থিতি সম্পর্কে আঙ্কারাকে অবহিত করা হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ সপ্তাহের শুরুতে ফিদানকে জোর দিয়ে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি কোনো পক্ষের জন্যই লাভজনক নয়। কী ঘটতে যাচ্ছে তা ইরান আমাদের আগেই জানিয়ে দিয়েছে। ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠকের সময় সম্ভাব্য অগ্রগতির বিষয়টিও উঠে আসে এবং তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের মাধ্যমে ইরানকে জানিয়েছিল যে এই প্রতিক্রিয়া অবশ্যই নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে হতে হবে। এর জবাবে ইরান বলেছে, দামেস্কে তাদের দূতাবাসে ইসরায়েলের হামলার জবাবে এই প্রতিক্রিয়া হবে এবং তারা এর বাইরে কিছু করতে যাবে না।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইরান বিস্ফোরক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা ইসরায়েলের মাটিতে প্রথম সরাসরি হামলা হিসেবে চিহ্নিত হয়। হামলার পর ইসরায়েলি সেনার মুখপাত্র বলেন, ইরান ৩০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করলেও এর ৯৯ শতাংশই প্রতিহত করা হয়েছে। গত ১ এপ্রিল দামেস্কের ইরানি কনস্যুলেটে সন্দেহভাজন ইসরায়েলি হামলার জবাবে এই হামলা চালানো হয়। কনস্যুলে হামলায় ইরানের ইসলামি রেভল্যুশনারি গার্ড ফোর্সের ৭ অফিসার নিহত হন।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে এসব যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে এবং আঞ্চলিক সংঘাত বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে।
তুরস্কের একটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, সিআইএ প্রধান উইলিয়াম বার্নস ঈদুল ফিতরের ছুটিতে তুরস্কের এমআইটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ইব্রাহিম কালিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতা চেয়েছিলেন। তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে, যদিও সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি