শরীরের ত্বকের মতো মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্পেও জমে মৃত কোষ। শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করলে কিছু মৃত কোষ উঠে গেলেও ভালোভাবে তা কখনোই যায় না। আর যাঁদের স্ক্যাল্প বেশি শুষ্ক, তৈলাক্ত এবং খুশকিযুক্ত, তাঁদের এক্সফোলিয়েশন অত্যন্ত জরুরি। কারণ, তৈলাক্ত ত্বকে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হয়। এর ফলে ধুলাবালু আর ময়লা বেশি আটকায়।
শুধু শ্যাম্পু দিয়ে এই ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। আর এ ধরনের ত্বকেই খুশকির প্রবণতা বেশি। ঠিকমতো এক্সফোলিয়েট করলে দ্রুতই খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আর শুষ্ক ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করতে পরিমিত এক্সফোলিয়েশন দরকার। এতে দূর হবে ফ্লেকিনেস।
প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর
বাজারে অনেক ধরনের এক্সফোলিয়েটর কিনতে পাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশে এগুলো একটু বেশি ব্যয়বহুল। চাইলেই হাতের কাছে থাকা মাত্র কয়েকটি জিনিস দিয়েই বানিয়ে নিতে পারেন নিজের স্ক্যাল্প অনুযায়ী এক্সফোলিয়েটর।
ব্রাউন সুগার ও ওটমিল
আর্দ্রতার জন্য এই এক্সফোলিয়েটর সব ধরনের স্ক্যাল্পের জন্যই প্রযোজ্য। দুই টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার, দুই টেবিল চামচ ওটমিলের গুঁড়া আর সঙ্গে নিজের পছন্দমতো যেকোনো হেয়ার কন্ডিশনার দুই টেবিল চামচ। তবে এখানে প্রাকৃতিক হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করা ভালো। কারণ, বাজারে যে কন্ডিশনার পাওয়া যায়, সেগুলো চুলের গোঁড়ায় লাগানো যায় না। এ ক্ষেত্রে কালো চা বা সবুজ চায়ের লিকার মেশাতে পারেন। যেকোনো চুলের জন্য এটি খুব ভালো এবং সহজ কন্ডিশনার।
অ্যাসপিরিন স্ক্রাব
অ্যাসপিরিন আমরা সবাই চিনি। মাথাব্যথা হলে অনেকেই এটি সেবন করেন। তবে অ্যাসপিরিন দিয়ে যে ত্বকের মৃত কোষ খুব সহজেই পরিষ্কার করা যায়, এটা অনেকেরই অজানা। স্ক্যাল্পের এক্সফোলিয়েটর হিসেবে এটি খুব ভালো। মাত্র ছয় বা আটটি অ্যাসপিরিনের সঙ্গে হালকা কুসুম গরম পানি মিশিয়ে পেস্ট বানান। এরপর টুথব্রাশের সাহায্যে স্ক্যাল্পে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এর আগে ফুটন্ত গরম পানিতে টুথব্রাশটি ভিজিয়ে ব্রিসলগুলো নরম করে নিতে ভুলবেন না।
তেল-মধুর স্ক্রাব
চুলের বৃদ্ধির জন্য এই এক্সফোলিয়েটর অনেক উপকারী। এটি শুধু স্ক্যাল্পের মৃত কোষই সরায় না, সঙ্গে বাড়তি পুষ্টিও জোগায়। এক টেবিল চামচ নারিকেল তেলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার, এক চামচ মধু, আধা চামচ লবণ মিশিয়ে বানান এক্সফোলিয়েটরটি।
তেল-লেবুর স্ক্রাব
খুশকি দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজ দাওয়াই। এর সঙ্গে লবণ যোগ করলেই হয়ে যাবে দারুণ এক্সফোলিয়েটর। লবণ একটি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর। এ ছাড়া এটির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান খুশকি দূর করতেও বেশ কার্যকর। দুই চামচ লবণ, দুই চামচ জলপাই বা নারিকেল তেল (বা দুটি তেলই এক চামচ করে) আর এক চামচ লেবুর রস। ব্যস, এতেই তৈরি খুশকিনাশক এক্সফোলিয়েটর, যা সপ্তাহে একবার ব্যবহারেই ভালো ফল পাওয়া যাবে।
এক্সফোলিয়েটর সব সময় ভেজা চুলে লাগানো উচিত। এ জন্য প্রথমে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে তারপর ভেজা স্ক্যাল্পে আঙুল দিয়ে ঘষে ঘষে এটি লাগাতে হবে। তবে ঘষার সময় নখ লাগানো থেকে বিরত থাকুন।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন, ফেমিনা, বি বিউটিফুল