‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে পূর্ণিমার অভিষেক। ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাতে নায়ক ছিলেন রিয়াজ। এরপর কেটে গেছে ২৭ বছর। আশির দশকে চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া এই তারকার আজ জন্মদিন। দিনটিতে জেনে নেওয়া যাক পূর্ণিমার জীবনের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিক।

পূর্ণিমা যখন অভিনয় শুরু করেন, তখন তিনি স্কুলের গণ্ডি পার করেননি। ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করা পূর্ণিমা মাত্র ১৫ বছর বয়সে জাকির হোসেন রাজুর ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমাতে রিয়াজের নায়িকা হয়ে চলচ্চিত্রে তাঁর অভিষেক। প্রথম সিনেমাতে আলোচনায় আসেন তিনি।

২৭ বছরের অভিনয়জীবনে পূর্ণিমা অভিনীত সিনেমার সংখ্যাও অনেক। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার ‘মনের মাঝে তুমি’ ২০০৩ সালে মুক্তির পর চারদিকে হইচই ফেলে দেন পূর্ণিমা। সুপারডুপার হিট হয় সিনেমাটি। নায়িকা হিসেবে তাঁর পরিচিতি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। মতিউর রহমান পানুর পরিচালনায় এ সিনেমায় পূর্ণিমার বিপরীতে ছিলেন রিয়াজ।

‘হৃদয়ের কথা’ পূর্ণিমা অভিনীত আরেকটি সফল সিনেমা। এস এ হক অলিক পরিচালিত এ সিনেমাতেও পূর্ণিমার নায়ক ছিলেন রিয়াজ। এই সিনেমার গানগুলোও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। একই পরিচালকের ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’ সিনেমায় অভিনয় করেন পূর্ণিমা।

নায়িকা হিসেবে পূর্ণিমা দেশের প্রথম সারির সব নায়কের সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন। সবচেয়ে বেশি, ২৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন রিয়াজের বিপরীতে। এ ছাড়া রুবেল, মান্না, আমিন খান, শাকিব খান, ফেরদৌস, কাজী মারুফ, আরিফিন শুভসহ অনেক নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন।

বাণিজ্যিক সিনেমা যেমন করেছেন, তেমনি সামাজিক গল্প ও সাহিত্যনির্ভর গল্পের সিনেমাও করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সুভা’ গল্প অবলম্বনে একই নামে চাষী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় বাক্প্রতিবন্ধী ‘সুভা’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা পান পূর্ণিমা। এ সিনেমায় তাঁর বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান।

কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের ‘মেঘের পরে মেঘ’ অবলম্বনে চাষী নজরুল ইসলামের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধ গল্পনির্ভর এ সিনেমায় পূর্ণিমা অভিনয় করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শাস্তি’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত সিনেমায়ও তিনি অভিনয় করেছেন।

সিনেমায় অভিনয় কমিয়ে দিয়ে একসময় শুরু করেন উপস্থাপনা ও নাটকে অভিনয়। জাহিদ হাসান পরিচালিত দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক ‘লাল নীল বেগুনী’তে অভিনয় করে বেশ সাড়া পান। উপস্থাপক হিসেবে দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছেন।

২৭ বছরের অভিনয়জীবনে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা ৮০। পূর্ণিমার ভাষ্যমতে, তাঁর নিজের ভালো লাগার সিনেমার মধ্যে রয়েছে নায়ক রাজ রাজ্জাক পরিচালিত ‘সন্তান যখন শত্রু’। এর বাইরে তাঁর নিজের ভালো লাগার সিনেমার মধ্যে আছে ‘যোদ্ধা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘সুলতান’, ‘পিতা–মাতার আমানত’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘শাস্তি’, ‘শুভা’, ‘বিয়ের প্রস্তাব’,‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না’ ইত্যাদি।

কাজী হায়াতের ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন পূর্ণিমা। ১০. সর্বশেষ ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’ সিনেমাতে দেখা গেছে তাঁকে। এবারের জন্মদিনে তেমন কোনো আয়োজন রাখেননি বলে জানিয়েছেন পূর্ণিমা।

সর্বশেষ ছটকু আহমেদের ‘আহারে জীবন’ সিনেমাতে দেখা গেছে তাঁকে। এবারের জন্মদিনে তেমন কোনো আয়োজন রাখেননি বলে জানিয়েছেন পূর্ণিমা। ছবিতে মেয়ের সঙ্গে পূর্ণিমা

পূর্ণিমা অভিনীত দুটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে, একটির নাম ‘জ্যাম’, অন্যটি ‘গাঙচিল’। দুটি সিনেমারই পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল। সিনেমা দুটির শুটিং পাঁচ বছর আগে শুরু হয়। কয়েক দফা শুটিংয়ের পরও সিনেমা দুটির কাজ পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।

২০২২ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আশফাকুর রহমানকে বিয়ে করেন পূর্ণিমা। পূর্ণিমার এটা দ্বিতীয় বিয়ে। ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর আহমেদ জামাল ফাহাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পূর্ণিমা। ২০১৪ সালে কন্যাসন্তানের মা হন তিনি।