এসপানিওলের মাঠে আগের ম্যাচে ৪-২ গোলের দারুণ এক জয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেছিল বার্সেলোনা। সেদিন নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠে শিরোপা উদ্যাপন করতে নেমে বিরূপ পরিস্থিতিতেই পড়তে হয় ক্যাম্প ন্যুয়ের দলটির খেলোয়াড়দের। এসপানিওল সমর্থকদের ‘তাড়া’ খেয়ে শিরোপা উদ্যাপন অসম্পূর্ণ রেখেই মাঠ ছাড়তে হয় তাঁদের।
পরে অবশ্য ছাদখোলা বাসে নগর প্রদক্ষিণ করে শিরোপা জয় উদ্যাপন সারেন জাভি-লেভারা। এরপরও মাঠের উদ্যাপন তো ভিন্ন ব্যাপার। শিরোপা হাতে ঘরের দর্শকদের সঙ্গে এই উদ্যাপনের কোনো তুলনা হয় না। তাই সেই উপলক্ষ্যের অপেক্ষাতেই ছিল পুরো বার্সেলোনা দল। ক্যাম্প ন্যুতে গতকাল রাতে শিরোপা হাতে সেই মুহূর্তটিই উদ্যাপন করেছে বার্সা।
শিরোপা উদ্যাপনের রাতটা অবশ্য কিছুটা ম্লান হয়েছে রিয়াল সোসিয়েদাদের কাছে বার্সা হেরে যাওয়ায়। ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ৯০ মিনিটে রবার্ট লেভানডফস্কির গোলে ব্যবধান ২-১ করে বার্সা। পরে সেই ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ। সোসিয়েদাদের কাছে হারলেও বার্সার শিরোপা উদ্যাপনে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। ৪ বছর পর লিগ শিরোপা উদ্ধারের উৎসবের মুহূর্তে উচ্ছ্বাসটা বাঁধভাঙাই ছিল জাভিদের।
খেলোয়াড় হিসেবে আটবার লা লিগা শিরোপা জিতেছেন জাভি। এবার কোচ হিসেবে জিতলেন নিজের প্রথম লা লিগা শিরোপা। দারুণ এই অর্জনের পর উচ্ছ্বসিত জাভি বলেছেন, ‘এই রাত উদ্যাপনের। আমি সভাপতি, স্টাফ আর খেলোয়াড়দের কাছে কৃতজ্ঞ। এখান থেকে যাওয়ার পর গত ছয় থেকে সাত বছরে আমি সবচেয়ে বড় যে পরিবর্তন দেখেছি, তা হচ্ছে সমর্থক। তারা দুর্দান্ত। তারা দারুণ মুহূর্ত দিয়েছে। বার্সেলোনার জন্য এটা দারুণ ব্যাপার যে দলটি ঐক্যবদ্ধ। বার্সেলোনা সমর্থকদের জন্য উদ্যাপন করাটা প্রয়োজন। এই ক্লাবের কোচ হিসেবে আমি গর্বিত।’
খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে শিরোপা জয়ের মধ্যে পার্থক্য কোথায় জানতে চাইল জাভি বলেছেন, ‘কোচ হিসেবে অনেকে চাপের মুখে থাকতে হয়। অনেক কঠিন সময় আসে। বার্নাব্যুতে হারার পর আমার জন্য অনেক কঠিন সময় এসেছিল। এ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে।’
বার্সায় নিজের কঠিন সময় নিয়ে জাভি এরপর বলেন, ‘এমন সময় এসেছে, যখন তারা (সমর্থকেরা) আমার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছিল না। একসময় বার্সেলোনার পরিবেশ বেশ নির্মম হয়ে উঠেছিল। তখন এই অনুভূতি হয়েছিল যে কাজগুলো ঠিকঠাক হচ্ছে না।’
দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে নানা সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল জাভিকে। সমালোচনা সামলানো নিয়ে বার্সা কোচ বলেছেন, ‘আমি এটা পাত্তা না দেওয়ার চেষ্টা করি; যদিও তা অসম্ভব। এটা আমার মা–বাবা, স্ত্রী এবং বাচ্চাদের স্কুল পর্যন্ত চলে আসে।’