দুই সহযোগী দলের ম্যাচ। একই গ্রুপে থাকা বাকি দলগুলো ছাড়া অন্যদের আগ্রহ বেশি থাকার কথা নয়। এরপর প্রথমে ব্যাট করে ওমান যখন ১০৯ রানে অলআউট হয়, তখন কৌতূহলী চোখ আরও কমে যাওয়ার কথা। অথচ নামিবিয়া-ওমানের এমন ম্যাচটা কিনা উপহার দিল জমাট প্রতিদ্বন্দ্বিতা!
দুর্দান্ত বোলিংয়ে নামিবিয়াকে ঠিক ১০৯ রানেই আটকে দিল ওমান। ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যা সর্বশেষ চার আসরে দেখেনি। তবে সুপার ওভারের লড়াইয়ে আর পারেনি ওমান। নামিবিয়ার ২১ রান তাড়া করতে নেমে মধ্যপ্রাচ্যের দলটি আটকে যায় ১০ রানে।
বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে নামিবিয়ার সুপার ওভারে জয়ের নায়ক ডেভিড ভিসা। ৩৯ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ব্যাট হাতে ৪ বলে তোলেন ১৩ রান, পরে বল হাতে আটকে দেন ওমান ব্যাটসম্যানদের। যে নৈপুণ্যে হন ম্যাচসেরাও।
তবে এই ভিসাই মূল ম্যাচের শেষ বলে শট খেলতে পারলে নামিবিয়া হয়তো টাইয়ের মুখে পড়ত না। শেষ ওভারে জয়ের জন্য নামিবিয়ার দরকার ছিল মাত্র ৪ রান। ওমানের মিডিয়াম পেসার মেহরান খান প্রথম তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট তুলে লড়াই জমিয়ে তোলেন। ভিসা ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান শেষ দুই বলে। এর প্রথমটিতে দুই রান নেওয়ার পর শেষ বলে দরকার ছিল আরও দুই রান।
কিন্তু মেহরানের অফ স্টাম্পের বাইরে লাফিয়ে ওঠা বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তিনি। ওমান উইকেটরক্ষক নাসিম খুশিও বল গ্লাভসে নিতে ব্যর্থ হলে রানের জন্য দৌড়ান ভিসা ও তাঁর সঙ্গী ম্যালান ক্রুগার। খুশি বল কুড়িয়ে স্টাম্প ভেঙে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে তাড়াহুড়ায় সেটি মিস করায় রান পেয়ে যায় নামিবিয়া, ম্যাচ থামে সমতায়।
শেষের নাটকীয়তার আগে ম্যাচ এগিয়েছে ম্যাড়মেড়েভাবে। টস হেরে ব্যাট করতে নামা ওমান প্রথম দুই বলেই হারায় দুই উইকেট। এতে অবশ্য বোলার রুবেন ট্রাম্পেলমানের কৃতিত্বই বেশি। বাঁহাতি এ পেসার প্রথম দুই ডেলিভারিতে এলবিডব্লুতে উইকেট নেওয়ার পর নিজের দ্বিতীয় ওভারেও আরও এক উইকেট। ১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা ওমানের ব্যাটিং এরপর খুব একটা ডানা মেলতে পারেনি।
খালিদ কাইলের ৩৯ বলে ৩৪ আর সাবেক অধিনায়ক জিশান মাকসুদের ২০ বলে ২২ রানে ভর করে এক শ পার করে দলটি। ট্রাম্পেলমান নেন ৪ উইকেট, ভিসা ৩ উইকেট।
রান তাড়ায় নামিবিয়া খেলেছে সতর্ক ক্রিকেট। দ্বিতীয় বলে ওপেনার মাইকেল ফন লিনগেন আউট হওয়ার পর নিকোলাস ডাভিন ও ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক ৪২ রানের জুটি গড়ে লক্ষ্য নাগালে রাখেন। ডাভিন ৩১ বলে ২৪ রান করে আউট হলেও ফ্রাইলিঙ্ক টিকেছিলেন ২০তম ওভার পর্যন্ত। তিনি ৪৮ বলে ৪৫ রান করে শেষ ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হতেই ম্যাচ ফসকে যেতে থাকে নামিবিয়ার।
যদিও সুপার ওভার শেষ পর্যন্ত হাসিই ফুটিয়েছে আফ্রিকান দেশটির মুখে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওমান: ১৯.৪ ওভারে ১০৯ (প্রজাপতি ০, খুশি ৬, ইলিয়াস ০, মাকসুদ ২২, কাইল ৩৪, আইয়ান ১৫, নাদিম ৬, মেহরান ৭, শাকিল ১১, কলিমউল্লাহ ২, বিলাল ১; ট্রাম্পেলমান ৪-০-২১-৪, ভিসা ৩.৪-০-২৮-৩, লুঙ্গামেনি ৪-০-১৮-০, শোলাৎজ ৪-০-২০-১, এরাসমান ৪-০-২০-২)।
নামিবিয়া: ২০ ওভারে ১০৯ / ৬ (লিনগেন ০, ডাভিন ২৪, ফ্রাইলিঙ্ক ৪৫, এরাসমাস ১৩, স্মিট ৮, ভিসা ৯ *, গ্রিন ০, ক্রুগার ১ *; বিলাল ৪-০-২৫-১, শাকিল ৩-০-২০-০, কলিমউল্লাহ ২-০-১০-০, ইলিয়াস ৪-১-১৭-১, মেহরান ৩-১-৭-৩, মাকসুদ ২-০-১২-০)।
ফল: ম্যাচ টাই। সুপার ওভারে নামিবিয়া জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভিড ভিসা।