সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা সুলতানপুর। সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় অঞ্চলটির বেশ কিছু মানুষ চোরাচালান থেকে শুরু করে নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। ছোট ছোট গ্যাংয়ে বিভক্ত হয়ে কাজগুলো করে তারা। আর এই গ্যাংগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এলাকার ভদ্রবেশী কিছু মানুষ। যাদের রাতের চেহারা এক, দিনের চেহারা অন্য। এই জনপদের নানান গল্প নিয়েই ‘সুলতানপুর’। আজ সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাসসহ দেশের ২২টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে।
‘বর্ডার’ কেন প্রদর্শনের অযোগ্য, জানালেন তাঁরা
এই গল্প কোথায় পেলেন? জানতে চাইলে ছবির পরিচালক সৈকত নাসির জানালেন, সীমান্তবর্তী এলাকার জনপদের এমন চিত্র ছোটবেলায় স্বচক্ষে দেখা। বলেন, ‘কুমিল্লায় আমার নানাবাড়ি। এলাকাটি সীমান্তবর্তী। ছোটবেলায় নানাবাড়িতে গেলে এমন সব দৃশ্য দেখতাম। করোনাকালে গল্পটি মাথায় আসে। তখন মনে হলো, এ ধরনের গল্প নিয়ে তো এখানে সিনেমা হয় না। সেই ভাবনা থেকেই কাজটি করা।’
সীমান্ত এলাকার চোরাচালান, অপরাধজগৎ নিয়ে ছবির গল্প। পর্দায় তা ঠিকঠাক ফুটিতে তুলতে যশোরের সীমান্তবর্তী এলাকা চৌগাছা উপজেলাকে বেছে নেন পরিচালক।
সৈকত নাসির বলেন, ‘দর্শকের কাছে গল্প বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য সত্যিকারের একটি সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়ে শুটিং করেছি। শুটিং শুরু করার আগে প্রায় দুই মাস ওখানে গিয়ে কাজ করেছি। ওখানকার মানুষের সঙ্গে মিশেছি, গল্প করেছি, তাঁদের সম্পর্কে জেনেছি। এরপর শুটিং করেছি। তবে সেখানে গিয়ে ঠিকঠাক শুটিং করা যাবে কি না, এ নিয়ে দুশ্চিন্তাও ছিল। আশঙ্কা ছিল যাঁদের নিয়ে গল্প, শুটিংয়ের সময় বাধা সৃষ্টি করতে পারেন তাঁরা। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো সীমান্তবর্তী এলাকায় যাঁরা এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত, শুটিংয়ের সময় তাঁরা নিজ থেকেই সহযোগিতা করেছেন। অঞ্চলটি অজপাড়াগাঁ হওয়ায় সিনেমার শুটিং দেখাটাও ছিল তাঁদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। এ কারণেই শুটিংয়ের সময় উল্টো তাঁদের সহযোগিতা পেয়েছি।’
ছবির অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র সুলতান নজর উদ্দিন হায়দার। করেছেন আশিস খন্দকার। এলাকার মানুষের কাছে তিনি পীর বাবা নামে পরিচিত। এই মানুষটাই কিন্তু রাতের আঁধারে অন্য রকম একটি চরিত্র হয়ে ওঠেন। আশিস খন্দকার বলেন, ‘দর্শক হয়তো ভাববেন আমি খলনায়কের চরিত্র করেছি। কিন্তু এটিকে আমি বাংলা সিনেমার প্রথাগত খলনায়ক চরিত্র মনে করি না। আমি চরিত্রটির বাস্তবতাকে ছুঁয়ে অভিনয় করার চেষ্টা করেছি। চরিত্রটির জন্য আমার প্রায় তিন বছরের প্রস্তুতি ছিল।’
‘সুলতানপুর’ দিয়ে প্রায় দুই বছর পর ফিরছেন নায়িকা অধরা খান। তিনি বলেন, ‘এই ছবিটিতে নায়ক-নায়িকা বড় বিষয় নয়, গল্পই হিরো, হিরোইন। আমার বিশ্বাস, দর্শক ছবিটি দেখে আরাম পাবেন। কারণ, এ ধরনের গল্পের প্রতি দর্শকের বাড়তি আগ্রহ আছে।’
‘সুলতানপুর’-এর মূল গল্প লিখেছেন পরিচালক। চিত্রনাট্য ও সংলাপ আসাদ জামান। আরও অভিনয় করেছেন সানজু জন, রাশেদ মামুন, মৌমিতা মৌ, ফারুখ সুমন, বিলাস খান, সেতু, শাহিন মৃধা প্রমুখ।