ছেলেবেলা থেকেই কোরবানির ঈদ এলে মাহাবুব ই খোদার মধ্যে একটা অন্য রকম রোমাঞ্চ কাজ করত। বাবার সঙ্গে হাটে যাওয়ার আনন্দটাই ছিল আলাদা। কীভাবে গরুগুলো মোটাতাজা করা হলো, কত দিন লালন–পালন করতে হয়, সুযোগ পেলেই এসব নানা বিষয়ে বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করতেন তিনি।
২০১১-১২ সালের দিকে ঢাকায় কিছু শহুরে খামার দেখে মাহাবুবের আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। সেই আগ্রহ থেকেই ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে তাঁর ‘টাইমস অ্যাগ্রো র্যাঞ্চ’। বাবার সহায়তায় শুরুতে ছোট পরিসরে শুরু হলেও পরে নিজ চেষ্টাতেই ব্যবসা বড় করেছেন মাহাবুব। এখন তাঁর খামারে ৭০টির বেশি গরুর পাশাপাশি আছে প্রায় ৪০টি ছাগল ও ভেড়া।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগে পড়ছেন মাহাবুব। খামারের কাজ সামলাতে একাডেমিক জীবনেও অনেক সময় ছাড় দিতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সহায়তা পান বলেই জানালেন। যদিও এখন খামারের পরিসর এতই বড় হয়েছে যে পড়াশোনা আর কাজ—দুটো একসঙ্গে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কম্পিউটার বিজ্ঞানের মতো জটিল বিষয় বাদ দিয়ে তাই অন্য কোনো বিষয়ে স্নাতক করার কথা ভাবছেন এই তরুণ।
শুধু নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্যই নয়, অন্য মানুষেরও কর্মসংস্থান হয়, এ কারণেও খামারের কাজটা বেশ ভালো লাগে মাহাবুবের। এখন তাঁর খামারে ছয়জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর আশা আছে।
মাহাবুবের খামারের গরুগুলো মূলত কোরবানির ঈদের জন্যই প্রস্তুত করা হয়। এ বছর এরই মধ্যে ৪০টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। বিক্রি করা গরুগুলো বিনা মূল্যে ক্রেতার বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন মাহাবুব। এই কৌশলের কারণে তাঁর খামারে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। মাহাবুব বলেন, ‘আমি আমার খামারকে আরও বড় পরিসরে গড়ে তুলতে চাই। দেশের বাজারে চাহিদা আছে, এমন গরু নিয়ে কাজ করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমার দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। কারণ, আমি আমরা ব্যবসার পাশাপাশি সব সময়ই একাডেমিক বিষয়টা গুরুত্ব দিতে চেষ্টা করেছি।’