চট্টগ্রাম নগরের রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (সিইপিজেড) অবস্থিত দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়, যা চলে প্রায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সংঘর্ষের পর কারখানা দুটি আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেএমএস পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিভিন্ন দাবিতে গত বুধবার বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা ইপিজেড এলাকার একটি ফটক আটকে দেন। জেএমএস কারখানার পাশে মেরিমকো লিমিটেড নামের আরেকটি কারখানা রয়েছে। ফটক বন্ধ করে দেওয়ার পর গত বুধবার মেরিমকোর শ্রমিকদের সঙ্গে জেএমএসের শ্রমিকদের কথা-কাটাকাটি হয়। এর সূত্র ধরে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আর আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেলা একটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় কারখানা দুটির সামনে শ্রমিকেরা জড়ো হয়ে ছিলেন। কারখানার ফটক বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় কারখানা দুটির শ্রমিকেরা একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়েছেন। মেরিমকোতে কর্মরত মো. শিমুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার বেতন–ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন জেএমএসের শ্রমিকেরা। ওই একই ফটক দিয়ে তাঁদের বের হতে হয়। মেরিমকোর কিছু শ্রমিক ফটক খুলে বের হতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটি হয়। সেই রেশ ধরে আজ ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে মেরিমকোর শ্রমিকেরা এক হয়ে পাল্টা ধাওয়া দিয়েছেন। অন্যদিকে জেএমএসের শ্রমিকদের দাবি, মেরিম কো লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিনা কারণে তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে কারখানা।
এ ঘটনার বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফটক বন্ধ থাকায় কারখানায় ঢোকা যায়নি। তবে শিল্প পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সুলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এদিকে আহত ব্যক্তিদের বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এক কর্মকর্তা জানান, সিইপিজেড থেকে আহত অবস্থায় ১০ জনকে আনা হয়েছে। তবে কারও অবস্থা গুরুতর নয়।
জানতে চাইলে ইপিজেড থানার পরিদর্শক (অভিযান) আফসার উদ্দিন বলেন, ঘটনার পর জেএমএস আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মেরিমকো লিমিটেডকেও বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।