প্রশ্নটা এখন সবার মুখে—কে হবেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের পরবর্তী অধিনায়ক? আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খালেদ মাহমুদকেও সাংবাদিকেরা একই প্রশ্ন করেন। উত্তরে তিনি সাকিব আল হাসানকেই এগিয়ে রেখেছেন। তবে লিটন দাস অধিনায়ক হলেও মাহমুদের কোনো আপত্তি নেই।
সাবেক এই অধিনায়ক আজ এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘আমি এখন লিটন দাসকে কীভাবে বলব লিটন দাস নয় (হাসি)। লিটন ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতিয়েছে। কিন্তু সাকিব তো অবশ্যই এখানে এগিয়ে থাকবে। সাকিবের মাথা, সাকিবের অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা, সবকিছু তো অনেক বেশি। তারপরও আমি লিটনকে ছোট করতে চাই না। সে ভালো কাজ করেছে।’
দুজনের মধ্যে সাকিবকে এগিয়ে রাখার ক্ষেত্রে মাহমুদের যুক্তিটা এ রকম, ‘আমি মনে করি, যে দলে সাকিব আছে…আমার ব্যক্তিগত মতামত, আমি হলে হয়তো সাকিবের কথাই চিন্তা করতাম। লিটন, শান্ত, মিরাজ এরা তৈরি হবে। এদেরই অধিনায়কত্ব করতে হবে। এদের হাতেই আর্মব্যান্ড যাবে। তামিম করবে না, সাকিব একসময় অবসরে যাবে। একসময় মুশফিক অবসরে যাবে। তখন এরাই সিনিয়র হবে।’
মাহমুদ এটাও বলেছেন, লিটনকে অধিনায়ক করা হলে তাঁর অধীনে খেলতে সাকিবের কোনো সমস্যা হবে না। তাঁর কথা, ‘লিটনকে (নেতৃত্ব) দিলে যে খুব বড় সমস্যা হবে, তা নয়। সাকিবকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমার মনে হয় না সাকিবের কাছে এসব কোনো বিষয় হবে। আমি জানি, লিটনকে অনেক বেশি সাহায্য করবে সাকিব। যদি বোর্ড মনে করে লিটন, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। লিটন যে প্রস্তুত নয়, এটা বলাও ঠিক হবে না। ক্লাব লেভেল খেলেছে, জাতীয় দলে খেলছে, তার অভিজ্ঞতাটাও অনেক ভালো। যেহেতু ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি, তাই লিটনের কথা বারবার আসবে।’
তবে সব দিক বিবেচনায় মাহমুদ এগিয়ে রাখবেন সাকিবকেই, ‘কিন্তু এখনো সাকিব যেহেতু আছে, আমার মনে হয় আমাদের হাতে খুব ভালো একটা চয়েস আছে।’
তামিম ইকবালের আচমকা অবসরের ঘোষণা থেকেই অধিনায়কত্ব নিয়ে এত আলোচনার শুরু। গত ৬ জুলাই তামিম আচমকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ান। পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠক শেষে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন তামিম। তবে ৩ আগস্ট বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
পুরো বিষয়টি নিয়ে মাহমুদের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যেটা হয়েছে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তামিম এখন ব্যাক করেছে, খুব ভালো। সংবাদ সম্মেলনে দেখলাম অধিনায়কত্ব করবে না। এটা ওর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যেহেতু চোটে আছে, ও জানে না কতটুকু ফিট হতে পারবে, কতটুকু কামব্যাক করতে পারবে। সে খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমি মনে করি।’
নেতৃত্ব না দিলেও তামিমের খেলায় ফেরাটা দলের জন্য স্বস্তির ব্যাপার। সে কারণটাও মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘তামিম খেলবে আবার, এটা একটা নির্ভার হওয়ার মতো ব্যাপার। কারণ, আমরা এখনো তামিমের মতো একটা ওপেনার রেডি করতে পারিনি। অনেক ছেলে এসেছে, ভালো খেলছে। তবে তামিম যতটা প্রতিষ্ঠিত, যেভাবে নিজেকে তৈরি করেছে, সেটা তো আমরা পাইনি।’
বিশ্বকাপ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের যে স্বপ্ন, তা বাস্তবায়নের জন্য তামিমের মতো ক্রিকেটার দলে প্রয়োজন বলে মনে করেন মাহমুদ। ‘তামিম খেলবে, এশিয়া কাপ মিস করলেও নিউজিল্যান্ড সিরিজ ও বিশ্বকাপে খেলবে। আমরা বিশ্বকাপে অনেক বড় স্বপ্ন দেখছি। ওই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তামিমের মতো একজন খেলোয়াড় দরকার। আশা করি তামিম দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরবে। আর যেটা হয়েছে, সেটা পুরোপুরি যোগাযোগের ঘাটতি ও ভুল–বোঝাবুঝি ছিল আমার মনে হয়’—বলেছেন মাহমুদ।