তদন্ত কমিটি গড়ে দেওয়ার রায় শুনিয়ে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পি এস নরসিংহ ও বিচারপতি জে বি পর্দিওয়ালার বেঞ্চ বলেন, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়াকে (সেবি) তাদের চলমান তদন্ত দুই মাসের মধ্যে শেষ করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
সেবিকে দেওয়া নির্দেশে সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, কোথাও নীতি ও নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে কি না, কারচুপি করে শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। বাজারের স্বার্থে তারা কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা তদন্ত কমিটিকে জানাতে হবে।
সাপ্রে কমিটি আদানি প্রসঙ্গে বিস্তারিত সবকিছু তদন্ত করবে। বিধিবদ্ধ যে কাঠামো রয়েছে, তা কী করে আরও জোরদার করা যায়, সেই সুপারিশও করবে।
বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা কীভাবে করা যাবে, তা-ও খতিয়ে দেখে সুপারিশ করবে।
তদন্ত কমিটির সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা করতে সেবির চেয়ারম্যানকে সুপ্রিম কোর্ট অনুরোধ করেছে। প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেশ করতে বলা হয়েছে। সব সরকারি সংস্থাকেও তদন্ত কমিটির সঙ্গে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রয়োজনে ওই কমিটি বাইরের বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নিতে পারবে।
হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তোলা যাবতীয় অভিযোগ ও বাজারব্যবস্থায় অনিয়মের তদন্ত দাবি করা হয়েছিল। বিরোধীদের সম্মিলিত দাবি ছিল, হয় যুগ্ম সংসদীয় কমিটি গঠন করে তদন্ত হোক, নয়তো সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কমিটি গঠিত হোক। সরকার দুই দাবির একটিও মানেনি। সংসদে বিরোধীদের কোনো প্রশ্নের জবাবও দেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা হয়।
কেন্দ্রীয় সরকার সেই মামলার শুনানির সময় শীর্ষ আদালতকে প্রস্তাব দিয়েছিল, মুখবন্ধ খামে সরকার বিশেষজ্ঞদের নাম জমা দেবে। সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের মধ্য থেকে কাউকে বেছে নেবেন। তদন্তের বিষয়বস্তুও সরকার ঠিক করে দিতে চেয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেসব অস্বীকার করেন। প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, তাঁরা স্বচ্ছতা চান। সরকারের প্রস্তাব মানলে সেই স্বচ্ছতা থাকবে না।
সরকার অনুরোধ করেছিল, সেবি বা রিজার্ভ ব্যাংক বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, এমন কোনো বার্তা দেওয়া বাজার ও লগ্নিকারীদের স্বার্থে ঠিক হবে না।