২০১৯ সালে ‘নোটবুক’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে প্রনূতনের অভিষেক। সালমান খানের ব্যানারে নির্মিত ছবিটিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন জাহির ইকবাল। ২০২১ সালে করেন ‘হেলমেট’ আর ২০২৪ সালে ‘অমর প্রেম কি প্রেম কাহানি’। নোটবুক ছাড়া বাকি দুই ছবি ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছিল। ফিল্মি পরিবারের মেয়ে হয়েও আর পাঁচটা তারকা-সন্তানের মতো তাঁর ফিল্মি ভ্রমণটা যে মোটেও সহজ ছিল না, তার প্রমাণ ছয় বছরে মাত্র তিনটি ছবি। ‘নোটবুক’ ছবিতে প্রনূতনের অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। নবাগত হয়েও সবার নজর কেড়েছিলেন। তারপরও আজও সেভাবে নাম, যশ, অর্থ অর্জন করতে পারেননি প্রনূতন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের এ ভ্রমণ নিয়ে কিছু কথা ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেতা মনীশ বহেলের কন্যা।
সহজ পথ নয়
সিনেমার আবহে প্রনূতনের বেড়ে ওঠা। তাঁর আশপাশের সবাই ফিল্মি পরিবারের সদস্য। প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেত্রী নূতনের নাতনি। অভিনেতা মনীশ বহেলের মেয়ে। তাই সিনেমার দুনিয়ায় পা রাখার আগেই প্রনূতন জানতেন, মোটেও সহজ নয় এই পথ।

তাঁর ভাষ্যে, ‘আমার আশপাশের সবাই শিল্পী, তাই আমার বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে এমনও সময় আসতে পারে, যখন আপনার হাতে কোনো কাজ থাকবে না। আর আমাকে এ ধরনের সতর্কবাণী অনেক আগেই দেওয়া হয়েছিল। অনেকে আছেন, যাঁদের মা–বাবা বা কেউ ইন্ডাস্ট্রির নন, তাঁরা শুরুতে এসব বুঝতে পারেন না। তাই তাঁদের জন্য যাত্রাটা আবেগময় এবং কঠিন হয়ে ওঠে।’
লাভ-লোকসান
প্রনূতন ক্যারিয়ারের লাভ-লোকসানের হিসাব মেলাতে বসে দেখেছেন, লাভের চেয়ে তাঁর ক্ষতি বেশি হয়েছে। ফিল্মি পরিবারের হওয়ার কারণে নিশ্চয় বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন, স্বীকার করেন মনীশ-কন্যা। নিজেকে পর্দার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত করার সুযোগ পেয়েছেন। তবে হয়তো এ কারণে অনেক ক্ষতিও স্বীকার করতে হয়েছে, মনে করেন প্রনূতন। তাঁর ভাষ্যে, ‘প্রত্যেক তারকা-সন্তান ইন্ডাস্ট্রিতে সহজে জায়গা পান না। সবার জন্য এই পথ সহজ নয়। এর জ্বলন্ত উদাহরণ আমি নিজে। অভিনেতার মেয়ে বলে সবকিছু সহজে পেয়ে গেছি, তা কখনো নয়। আর এমন নয় যে আমাকে দাঁড় করানোর জন্য আমার বাবা পেছন থেকে টাকা ঢেলেছেন।’
নিজের শর্তে
২০১৬ সাল থেকে ক্রমাগত অডিশন দিয়ে এসেছেন বলে জানান প্রনূতন। অবশেষে ২০১৯ সালে তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি নোটবুক মুক্তি পায়।

শুরুর সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে বলেন, ‘একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমাকেও মানসিক উত্থান-পতনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে আমার জন্য মোটেও এসব ধাক্কা ছিল না। ২০১৬ থেকে অডিশন দেওয়া শুরু করে ২০১৮ সালে আমি প্রথম সুযোগ পেয়েছিলাম। আমাকে অনেক প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এখনো অডিশন দিয়ে যাচ্ছি। কিছুদিন আগেই একটা সিনেমার জন্য অডিশন দিয়েছি।’
প্রনূতন মনে করেন, নিজের শর্তে বাঁচতে চেয়েছিলেন বলে অনেক কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি তাঁকে হতে হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘অডিশন দেওয়ার সময় শুধু আমার নাম বলতাম। পদবি বলতাম না। চাইতাম না যে “বহেল” পদবি শুনে কেউ কোনো যোগসূত্র খুঁজে পাক। শুরুতে কেউ জানতেন না যে আমি ফিল্মি পরিবারের একজন। মনীশ বহেলের মেয়ে বা নূতনের নাতনি বলে কোনো কাস্টিং ডিরেক্টর আমাকে নির্বাচন করুক, কখনোই আমি তা চাইনি।’

সিনেমার পাশাপাশি একাধিক গানের ভিডিওতেও প্রনূতনকে দেখা গেছে। অভিনয় ছাড়াও নানানভাবে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করেন তিনি। তবে ধীরে ধীরে তাঁর ভাগ্য ফিরছে বলে মনে হয়। অভিনেত্রী জানান, আগামী দিনে তিনি হিন্দি-ইংরেজি ভাষার ছবি ‘কোকো অ্যান্ড নাটস’-এ আসতে চলেছেন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে আরও দুই ছবি। একটি পুলিশ ড্রামা, অপরটি থ্রিলার।