সংকটে সুখবর প্রবাসী আয় ও পণ্য রপ্তানিতে

0
203
চট্টগ্রাম বন্দর

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রবাসীদের পাঠানো আয়ও নভেম্বরে কিছুটা বেড়েছে। নভেম্বরে প্রবাসীরা বৈধ পথে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। গত বছরের নভেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। সেই হিসাবে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত মাসে প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্টে গড়ে ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় বৈধ পথে দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। আর আগস্টে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। এরপর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রবাসী আয় কমে যায়।

আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় ১৫ মাস ধরে কমছে রিজার্ভ। গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছিল। আমদানি দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রির কারণে তা কমে এখন ৩৪ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ডলার-সংকট দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো এখন প্রবাসী আয় দেশে আনতে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দাম দিচ্ছে ১০৮ টাকা। আর রপ্তানি আয় নগদায়নে ডলারের দাম ধরা হচ্ছে ১০০ টাকা। আমদানিতে ডলারের দাম ১০৫-১০৬ টাকা।

একাধিক ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী আয়ে ডলারের যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তা হুন্ডির চেয়ে বেশ কম। এ কারণে প্রবাসী আয় প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রবাসীদের থেকে ডলার কেনার পরও সেই ডলার বৈধ পথে দেশে না পাঠিয়ে হুন্ডির পথ বেছে নেয়। এ কারণে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা কমে গিয়েছিল।

এদিকে পণ্য রপ্তানিতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। প্রথম দুই মাসে ৮৫৯ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি হয়। প্রবৃদ্ধিও ছিল ২৫ শতাংশ। তবে সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। অক্টোবরে কমে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং চামড়াবিহীন জুতার রপ্তানি বেড়েছে। তবে হোম টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, রাসায়নিক পণ্য, প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমেছে।

মোট পণ্য রপ্তানির সাড়ে ৮৩ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১ হাজার ৮৩৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের পোশাকের মূল বাজার যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। সেখানে পোশাক বিক্রিতে ধস নামে। তাতে রপ্তানির ক্রয়াদেশ আসাও কমে যায়। তবে ক্রয়াদেশ আবার আসতে শুরু করেছে। এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.