শেয়ার সংখ্যা বাড়লেও তালিকাভুক্ত লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের শেয়ারদর সমন্বয় হচ্ছে না। সর্বশেষ গত মঙ্গলবারের ক্লোজিং প্রাইস ৮১ টাকা ২০ পয়সাকে ‘এডজাস্টেড প্রাইস’ বা সমন্বিত দর ধরে আজ রোববার লেনদেন শুরু হবে এ কোম্পানির। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
স্টক এক্সচেঞ্জের দায়িত্বশীল একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শেয়ারবাজারে এটি ‘অভিনব’ একটি ঘটনা হয়ে থাকবে। কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা বেড়ে সোয়া তিনগুণে উন্নীত হচ্ছে। ১ কোটি ৩১ লাখ থেকে বেড়ে ৪ কোটি ৩১ লাখ হচ্ছে। কিন্তু এর দর সমন্বয় হবে না। যদিও ডিপোজিটরি আইন বলছে, দর সমন্বয় করতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সম্মতিতেই একেবারে শেষ মুহূর্তে দর সমন্বয় না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, যদিও দর সমন্বয়ের জন্য গত সোম ও মঙ্গলবার স্পট মার্কেট শেষে বুধবার রেকর্ড ডেটে নির্ধারণ করে লেনদেনও বন্ধ রাখা হয়। এমনকি মঙ্গলবারের ক্লোজিং প্রাইস ৮১ টাকা ২০ পয়সার হিসাবে সমন্বিত দর ৩১ টাকা ৬০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। কেন দর সমন্বয় হচ্ছে না– এমন প্রশ্নে ডিএসইর কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যমান সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের নামে কোনো শেয়ার ইস্যু হচ্ছে না, এখন দর সমন্বয় হলে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ ক্ষতি থেকে বাঁচাতে সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন স্পট মার্কেটে লেনদেন হলো, রেকর্ড ডেটের নামে লেনদেন বন্ধ থাকল– তার কোনো উত্তর কারও কাছ থেকে মেলেনি।
পাবলিক ইস্যু রুলস অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানির নতুন শেয়ার ইস্যু প্রক্রিয়া তিনটি। প্রথমত বোনাস শেয়ার, দ্বিতীয়ত রাইট শেয়ার এবং তৃতীয়ত রিপিট আইপিও। লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ক্ষেত্রে এ তিন প্রক্রিয়ার বাইরে শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায়। নতুন শেয়ারহোল্ডাররা ১০ টাকা দরে শেয়ার পেয়েছেন, যদিও এর সর্বশেষ বাজার মূল্য ৮১ টাকা।
জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ার ক্ষমতা কোম্পানির ছিল না। কোম্পানির লোকসানি হওয়ায় এবং সম্পদ মূল্য কম থাকার কারণে রাইট শেয়ার বা রিপিট আইপিওরও যোগ্য ছিল না। এ অবস্থায় রুগ্ণ কোম্পানিটিকে স্বাভাবিক ব্যবসায় ফিরিয়ে আনতে বিশেষ বিবেচনায় প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় শেয়ার ইস্যু করে মূলধন সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কোম্পানিটি ব্যবসায় ফিরলে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা লাভবান হবেন।
এদিকে শেয়ারদর যে সমন্বয় হচ্ছে না, তা গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত অজানা ছিল লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী রাফি আহমেদের কাছে। তিনি বলেন, তাঁর বিশ্বাস ছিল, শেষ পর্যন্ত শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। তবে এ নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল, তা আগেই কাটানো যেত বলে মনে করেন তিনি। রাফি আহমেদ জানান, গত ১৪ জুন নতুন ১৪ জনসহ ১৭ জনের নামে তিন কোটি শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে। এ থেকে পাওয়া ৩০ কোটি টাকা থেকে এরই মধ্যে রূপালী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটা হয়েছে। এখন অন্য একটি ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাকাউন্ট করে শিগগিরই স্বাভাবিক ব্যবসা কার্যক্রম শুরুর আশা করছেন তিনি।